গাজীপুরের কোনাবাড়ী থানার কাশিমপুর রোডে অবস্থিত একটি পোশাক কারখানায় এক শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহত শ্রমিকের নাম হৃদয় (১৯)। তিনি গ্রিনল্যান্ড গার্মেন্টসের ডাইং বিভাগে ইলেকট্রিক্যাল মেকানিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এ ঘটনায় তার সহকর্মী হাসান মাহমুদ মিঠুন (২৮) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কোনাবাড়ী থানার ওসি মো. সালাউদ্দিন জানান, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনায় এটি যে একটি হত্যাকাণ্ড, তা নিশ্চিত হওয়া গেছে। ফুটেজে শনাক্ত করে একজনকে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি জড়িতদের ধরতে পুলিশের একাধিক দল অভিযান চালাচ্ছে।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, শনিবার (২৮ জুন) রাত ২টা ৩৯ মিনিটে হৃদয়কে চুরির অভিযোগে হাত-পা বেঁধে কারখানার একটি কক্ষে নেওয়া হয় এবং সেখানে তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। পুলিশ ধারণা করছে, রাতেই তার মৃত্যু হয়।
ওসি আরও জানান, ঘটনার পর হৃদয়কে আহত দেখিয়ে শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু হাসপাতাল রেজিস্ট্রারে তাকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে বলে উল্লেখ আছে।
খবর ছড়িয়ে পড়লে কারখানার সামনে কয়েকশ পোশাক শ্রমিক বিক্ষোভ করেন, কারখানায় ইটপাটকেল ছোড়েন এবং কয়েক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কারখানা কর্তৃপক্ষ শুরুতে ঘটনাটি গোপন করার চেষ্টা করে। পরে একটি নোটিশ জারি করে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে সরে যায়।
এদিকে পুলিশ কারখানায় অভিযান চালিয়ে সিসিটিভি ফুটেজসহ বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে। হৃদয়ের মরদেহে হাঁটু, কোমর, পিঠ, কব্জি, কনুই, নখ, ঘাড় ও মুখে আঘাতের চিহ্ন স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।
শনিবার রাত ১১টার দিকে নিহতের ভাই লিটন মিয়া অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত হত্যা ও লাশ গুমের অভিযোগে কোনাবাড়ী থানায় মামলা করেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২৭ জুন রাত ৮টার দিকে হৃদয় কাজের জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। পরদিন পরিবারের সদস্যরা কারখানায় গিয়ে জানতে পারেন, হৃদয়কে হত্যা করা হয়েছে। পরে তারা হাসপাতালের মর্গে গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করেন।
পুলিশ স্বজনদের উপস্থিতিতে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে।
বাদীর অভিযোগ, হৃদয়কে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করে ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে লাশ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তিনি দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
এ বিষয়ে কারখানার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাদের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।




























