ঢাকা মহানগরীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নিহত ১১৪ জন অজ্ঞাত শহীদের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলনের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার (২৯ জুলাই) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোস্তাফিজুর রহমান পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মো. শামসুদ্দোহা সুমন জানান, শহীদদের পরিচয় শনাক্তের উদ্দেশ্যে আদালত গুরুত্বপূর্ণ এই সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মাহিদুল ইসলাম এই আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন দিনে ও সময়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় নারী-পুরুষ সহ বহু মানুষ শহীদ হন। তাঁদের মধ্যে ১১৪ জনের পরিচয় অজানা থেকে যায়। পরে তাদের সবাইকে মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার কবরস্থানে অজ্ঞাতনামা শহীদ হিসেবে দাফন করা হয়।
এসআই মাহিদুল তার আবেদনে আরও উল্লেখ করেন, ভবিষ্যতে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য শহীদদের মরদেহ শনাক্ত করা অত্যন্ত প্রয়োজন। এজন্য কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত (পোস্টমর্টেম), ডিএনএ সংগ্রহ এবং প্রোফাইলিং করার প্রয়োজন রয়েছে। পরবর্তীতে ডিএনএ মিলিয়ে শনাক্তকৃত মরদেহ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তরের ব্যবস্থাও করতে হবে।
আবেদন ও নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোস্তাফিজুর রহমান আবেদনটি গ্রহণ করেন এবং আইনি নির্দেশনা দেন। তিনি ১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৬(২) ধারার আওতায় একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করে ঢাকার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
গত বছরের জুলাইয়ে শুরু হওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র গণআন্দোলনে বিভিন্ন সময় সংঘর্ষে শতাধিক আন্দোলনকারী শহীদ হন। অনেকের পরিচয় আজও অজানা রয়ে গেছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে তাদের পরিচয় নিশ্চিত করে পরিবারে ফেরত দেওয়ার পথ উন্মুক্ত হলো।
এদিকে, মানবাধিকার সংস্থাগুলো আদালতের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে। তারা আশা করছে, এই উদ্যোগ শহীদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের পাশাপাশি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
