
স্বামীর সাথে শামীমা নূর পাপিয়া। ফাইল ছবি
অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমানকে সাড়ে তিন বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ৫ লাখ টাকা করে মোট ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে কারাভোগ করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) ঢাকার ৩ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু তাহের এ রায় ঘোষণা করেন। এর আগে মামলার যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে রায় ঘোষণার এ দিন ঠিক করেন আদালত। রায় ঘোষণা সময় এ দুই আসামি আদালতে হাজির হয়। রায়ের পর আদালত তাদের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
দুদকের পক্ষের প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। মামলাটি পরিচালনা করেন আসামিপক্ষে আইনজীবী শাখাওয়াত উল্লাহ ভূইয়া।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৯ সালের অক্টোবর থেকে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাপিয়া ওয়েস্টিন হোটেলের ২৫টি রুমে অবস্থান করে রুম-নাইট, খাবার, মদ, স্পা, লন্ড্রি ও মিনি বারের বিলসহ মোট ৩ কোটি ২৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৬১ টাকা নগদ পরিশোধ করেন, যার কোনো বৈধ উৎস দেখাতে পারেননি। এছাড়া প্রায় ৪০ লাখ টাকার কেনাকাটারও উৎস অজানা।
দুদকের তদন্তে আরও পাওয়া যায়, ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত বাসাভাড়া বাবদ ৩০ লাখ টাকা, গাড়ির ব্যবসায় এক কোটি টাকা, নরসিংদীতে কার ওয়াশে ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ, ব্যাংকে জমা ৩০ লাখ ৫২ হাজার ৯৫৮ টাকা, বাসা থেকে উদ্ধার ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা এবং ২২ লাখ টাকার গাড়ির কোনো বৈধ উৎস নেই।
এর পরিপ্রেক্ষিতে পাপিয়া ও তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনে আরেকটি মামলা করে র্যাব। পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) অবৈধ পাঁচ কোটি টাকার খোঁজ পেয়ে পাপিয়া ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে আরেকটি মামলা করে।
২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে পাপিয়া দম্পতিকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। প্রায় সাড়ে চার বছর কারাভোগের পর ২০২৪ সালের ২৪ জুন তারা জামিনে মুক্তি পান।
পাপিয়া দম্পতির আইনজীবী শাখাওয়াত উল্লাহ ভূঁইয়া বলেন, এ মামলায় তাদের ২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ২০২৪ সালের ২৪ জুন পাপিয়া কারামুক্ত হন। তবে অপর আসামি মফিজুর গ্রেপ্তারের পর থেকেই কারাগারে রয়েছেন। আদালত তাদের যে সাজা দিয়েছেন, সেই মেয়াদের সাজা তারা আগেই শেষ করেছেন। পাপিয়াকে কারাগারে না পাঠিয়ে আমরা তার মুক্তি চেয়ে আবেদন করি। পরে আদালত বিশেষ বিবেচনায় আমাদের আবেদনটি মঞ্জুর করেছেন। তাকে কারাগারে যেতে হয়নি। আদালতের দেওয়া সাজা তারা ইতোমধ্যেই ভোগ করে ফেলেছেন। আমরা রায়ের পর্যবেক্ষণ দেখে আপিলের সিদ্ধান্ত নেব।


























