রবিবার । ডিসেম্বর ৭, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক আদালত ২০ অগাস্ট ২০২৫, ৪:০২ অপরাহ্ন
শেয়ার

চিকিৎসকের জবানবন্দি

নিউরোসায়েন্সেসে ভর্তি ১৬৭ জুলাই আহতের অনেকেরই মাথার খুলি ছিল না


International Crime Tribunal
রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে গত বছরের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গুরুতর আহত ১৬৭ জনকে ভর্তি করা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশেরই মাথার খুলি ছিল না।

বুধবার (২০ আগস্ট) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ এ তথ্য জানান হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক মো. মাহফুজুর রহমান। তিনি মামলার ১৩তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন।

এই মামলার আসামি ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। এর মধ্যে সাবেক আইজিপি মামুন ইতোমধ্যেই মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রুভার) হয়েছেন। আজ তাঁকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

জবানবন্দিতে ডা. মাহফুজুর রহমান ট্রাইব্যুনালে বলেন, হাসপাতালে বহির্বিভাগে ৫৭৫ জন গুলি ও পিলেটবিদ্ধ রোগীকে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দিতে হয়েছিল। সিট সংকটের কারণে গুরুতর অনেককেও ভর্তি করা যায়নি। গুরুতর আহত ১৬৭ জন ভর্তি হয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে ৪ জনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়, ২৯ জন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান এবং ৭ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে পাঠানো হয়।

ডা. মাহফুজুর রহমান আরও বলেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে অন্তত ৩৩টি অস্ত্রোপচার করেছেন। আহতদের শরীর থেকে বহু গুলি ও পিলেট বের করেছেন। অনেক রোগী নিজেদের শরীর থেকে বের হওয়া বুলেট ও পিলেট নিজেদের কাছে রাখতে চেয়েছিলেন। তদন্ত কর্মকর্তা সেসবের মধ্যে কিছু জব্দও করেন।

তিনি দাবি করেন, ১৯ জুলাই নতুন করে যখন গুলিবিদ্ধ ছাত্রদের আনা হচ্ছিল, তখন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা এসে তাঁদের ভর্তি না করার জন্য চাপ দেন।ডিবি কর্মকর্তারা তাঁকে সতর্ক করে বলেন, “অতি উৎসাহী হবেন না, আপনি বিপদে পড়বেন।” তাঁদের আরও নির্দেশ ছিল, ভর্তি হওয়া আহতদেরও যেন রিলিজ না দেওয়া হয়।

এ অবস্থায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কৌশলে ভর্তি রেজিস্ট্রারে আহতদের জখমের ধরন পরিবর্তন করে “গুলিবিদ্ধ” এর বদলে “রোড অ্যাক্সিডেন্ট” বা অন্য কারণে ভর্তি হিসেবে লিপিবদ্ধ করেন।

জবানবন্দির এক পর্যায়ে মাহফুজুর রহমান বলেন, “এই মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রধান নির্দেশদাতা শেখ হাসিনা। তাঁর নির্দেশ বাস্তবায়ন করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ওবায়দুল কাদের, সাবেক প্রতিমন্ত্রী আরাফাতসহ অনেকে। নিরস্ত্র আন্দোলনকারীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে যাঁরা হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছেন, তাঁদের বিচার ও ফাঁসি চাই।”