
বলিউডের ইতিহাসে অন্যতম আলোচিত প্রেম-বিচ্ছেদ হলো ঐশ্বরিয়া রাই ও সালমান খানের সম্পর্ক। পর্দার আড়ালে শুরু হলেও এই প্রেম আলোচনায় আসে সঞ্জয় লীলা বানসালির সিনেমা ‘হাম দিল দে চুকে সনম’ এর মাধ্যমে। ছবির রোমান্স যেন বাস্তব জীবনের প্রতিফলন ছিল। তবে স্বপ্নের সেই সম্পর্ক অচিরেই পরিণত হয় দুঃস্বপ্নে, আর বিচ্ছেদের পর ঐশ্বরিয়াকে শুধু ব্যক্তিজীবনেই নয়, কর্মজীবনেও সহ্য করতে হয়েছিল কঠিন আঘাত।
প্রতিবেশীর চোখে
বিজ্ঞাপন জগতের কিংবদন্তি নির্মাতা প্রহ্লাদ কাক্কর ছিলেন ঐশ্বরিয়ার ঘনিষ্ঠজন ও প্রতিবেশী। তিনি জানিয়েছেন, সম্পর্কের শুরু থেকেই সালমান ছিলেন অত্যন্ত আক্রমণাত্মক এবং নিয়ন্ত্রণমূলক। এক সাক্ষাৎকারে প্রহ্লাদ বলেন, “আমি একই ভবনে থাকতাম, সব শুনতাম-দেখতাম। ঝগড়া, চিৎকার, এমনকি দেয়ালে মাথা ঠোকার মতো ঘটনাও হতো। আসলে সম্পর্ক অনেক আগেই ভেঙে গিয়েছিল, ঘোষণা শুধু পরে এসেছে। বিচ্ছেদ সবার জন্যই স্বস্তি এনেছিল- ঐশ্বরিয়া, তার পরিবার, এমনকি সালমানের জন্যও।”
বলিউডে আস্থার ভাঙন
প্রহ্লাদের মতে, সম্পর্ক ভাঙনের পর ঐশ্বরিয়ার জন্য সবচেয়ে বড় আঘাত এসেছিল ইন্ডাস্ট্রি থেকেই। সালমানের পাশে দাঁড়িয়েছিল বলিউড, আর ঐশ্বরিয়াকে যেন একঘরে করে দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, “ঐশ্বরিয়া বিচ্ছেদে ততটা ভেঙে পড়েনি, কিন্তু গভীরভাবে আঘাত পেয়েছিল। কারণ, ইন্ডাস্ট্রি ন্যায়সংগত আচরণ করেনি। তখন থেকেই তার ভেতরে আস্থার ভাঙন তৈরি হয়।”
সহ-অভিনেতাদের অভিজ্ঞতা
‘হাম দিল দে চুকে সনম’ ছবির সহ-অভিনেত্রী স্মিতা জয়কর জানিয়েছেন, ঐশ্বরিয়া-সালমানের প্রেম সিনেমার পর্দায়ও স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল, যা ছবির সাফল্যের অন্যতম কারণ। তবে সহ-অভিনেত্রী শিবা চাড্ডা ভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা বলেন। তার ভাষায়, “শুটিং সেটে সালমানের মেজাজি স্বভাব বহুবার দেখেছি। একবার রাগ করে হুট করে সেট ছেড়ে চলে যান। এমনকি ক্লাইম্যাক্স দৃশ্যে আমাকে আলিঙ্গন করার কথা থাকলেও তিনি অস্বীকার করেন। ফলে শুটিং বন্ধ হয়ে যায়, পরে বানসালি এসে তাকে বোঝান।”
আজকের ঐশ্বরিয়া
বর্তমানে ঐশ্বরিয়া রাই শুধু বলিউডের তারকা নন, তিনি একজন বিশ্বসুন্দরী, আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের মুখপাত্র ও সফল অভিনেত্রী। একই সঙ্গে তিনি এক সন্তানের মা। তবে প্রহ্লাদ কাক্করের মতে, সালমানের সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙনের যে মানসিক আঘাত তিনি একসময় পেয়েছিলেন, তার ছাপ এখনও কোথাও না কোথাও রয়ে গেছে। হয়তো সেই কারণেই আজ আর আগের মতো নিয়মিত পর্দায় আসেন না তিনি।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস


























