রবিবার । ডিসেম্বর ৭, ২০২৫
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ১২ অক্টোবর ২০২৫, ৯:১৫ পূর্বাহ্ন
শেয়ার

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী যে ৬ নেতাকে মুক্তি দেবে না ইসরায়েল


plestine-leader

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী যে ৬ নেতাকে মুক্তি দেবে না ইসরায়েল

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ কার্যকর হয়েছে। শুক্রবার (১০ অক্টোবর) স্থানীয় সময় দুপুর ১২টায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। এরপর গাজার বেশ কিছু এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেয় ইসরায়েল।

চুক্তি অনুযায়ী, সোমবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে বন্দিবিনিময় প্রক্রিয়া শুরু হবে। এ সময় গাজায় আটক অন্তত ২০ জীবিত ইসরায়েলি বন্দি ও ২৮ জনের মরদেহ ফেরত পাঠানো হবে। এর বিনিময়ে প্রায় ২ হাজার ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল, যাদের মধ্যে ২৫০ জনের যাবজ্জীবন সাজা রয়েছে।

তবে এ বন্দিবিনিময়ের তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী ছয়জন শীর্ষ রাজনৈতিক ও সামরিক নেতা। তাদের মুক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ইসরায়েল সরকার। তালিকায় রয়েছেন— মারওয়ান বারঘুতি, আহমাদ সাদাত, আবদুল্লাহ বারঘুতি, হাসান সালামেহ, ইব্রাহিম হামেদ ও আব্বাস আল-সায়েদ।

মারওয়ান বারঘুতি: ১৯৫৯ সালে রামাল্লার কোবারা গ্রামে জন্ম নেওয়া বারঘুতি ফিলিস্তিনি রাজনীতির জনপ্রিয় মুখ। ফিলিস্তিনিদের কাছে তিনি ‘নেলসন ম্যান্ডেলা’ নামে পরিচিত। ২০০২ সালে ইসরায়েলি বাহিনী তাকে গ্রেফতার করে এবং ২০০৪ সালে পাঁচটি হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। তিনি পশ্চিম তীরে ফাতাহ আন্দোলনের অন্যতম শীর্ষ নেতা এবং দ্বিতীয় ইন্তিফাদার (২০০০–২০০৫) প্রধান সংগঠক ছিলেন।

আহমাদ সাদাত: ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইনের (পিএফএলপি) মহাসচিব সাদাত ১৯৫৩ সালে রামাল্লার আল-বিরেহ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। ২০০১ সালে সংগঠনের নেতা আবু আলি মুস্তাফা নিহত হওয়ার পর তিনি নেতৃত্বে আসেন। একই বছর ইসরায়েলি পর্যটনমন্ত্রী রেহাভাম জেভি হত্যার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। ২০০৬ সালে তাকে আটক করে ৩০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

আবদুল্লাহ বারঘুতি: হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসাম ব্রিগেডের শীর্ষ বোমা বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচিত। ২০০৩ সালে গ্রেফতার হওয়ার পর ইসরায়েলি আদালত তাকে যাবজ্জীবনসহ ৫,২০০ বছরের কারাদণ্ড দেয়। তিনিই ইসরায়েলি কারাগারে সবচেয়ে দীর্ঘ সাজাপ্রাপ্ত বন্দি।

হাসান সালামেহ: ১৯৭১ সালে গাজার খান ইউনিস শরণার্থী শিবিরে জন্ম নেওয়া সালামেহ আল-কাসাম ব্রিগেডের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন। ১৯৯৬ সালে ইসরায়েলে একাধিক আত্মঘাতী হামলার অভিযোগে গ্রেফতার হয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পান।

ইব্রাহিম হামেদ: ১৯৬৫ সালে রামাল্লার সিলওয়াদ এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। দ্বিতীয় ইন্তিফাদার সময় পশ্চিম তীরে হামাসের সামরিক শাখার প্রধান ছিলেন তিনি। ২০০৬ সালে গ্রেফতার হয়ে ২০১২ সালে যাবজ্জীবন সাজা পান।

আব্বাস আল-সায়েদ: ১৯৬৬ সালে পশ্চিম তীরের তুলকারেমে জন্ম নেওয়া আল-সায়েদ ২০০২ সালে গ্রেফতার হন। নেটানিয়ার পার্ক হোটেলে বোমা হামলার পরিকল্পনার অভিযোগে তাকে ১০০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

ফিলিস্তিনপন্থী সংগঠনগুলো বলছে, এই ছয় নেতার মুক্তি ছাড়া কোনো বন্দিবিনিময় চুক্তি পূর্ণাঙ্গ হতে পারে না। হামাসও ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান আলোচনায় তাদের মুক্তির দাবি জানিয়ে যাচ্ছে।