রবিবার । ডিসেম্বর ৭, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক আন্তর্জাতিক ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ১:৫৭ অপরাহ্ন
শেয়ার

আফগানিস্তানে পাকিস্তানের হামলায় নিহত কমপক্ষে ১২, আহত শতাধিক


Taliban

পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্তে ফের তীব্র সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। এতে পাকিস্তানি বাহিনীর হামলায় অন্তত ১২ জন আফগান বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন শতাধিক। বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকালে আফগান তালেবান সরকারের মুখপাত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ এক পোস্টে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স জানিয়েছে, মঙ্গলবার গভীর রাত থেকে সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনা শুরু হয় এবং তা ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলতে থাকে।

জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার বিকেলে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের কুররম সীমান্ত এলাকায় পাকিস্তানি সেনাদের লক্ষ্য করে আফগান সেনা ও পাকিস্তানে নিষিদ্ধ ঘোষিত সশস্ত্র গোষ্ঠী তেহরিক-ই তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) যৌথভাবে আকস্মিক হামলা চালায়। পাকিস্তানি সেনারা তাৎক্ষণিকভাবে পাল্টা হামলা শুরু করে। এতে আফগান সেনাবাহিনীর একাধিক সীমান্ত পোস্ট ও ট্যাংক ধ্বংস হয় এবং টিটিপির এক জ্যেষ্ঠ কমান্ডার নিহত হন বলে দাবি করেছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী।

সামরিক সূত্র জানিয়েছে, সংঘাত শুরুর ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই কুররম সীমান্তের ওপারে আফগানিস্তানের খোস্ট প্রদেশের শামশাদ পোস্ট ধ্বংস করে পাকিস্তানি সেনারা। ওই সময় সেখানে অবস্থানরত বেশ কয়েকজন আফগান সেনা ও টিটিপি যোদ্ধা হতাহত হন এবং বাকিরা পিছু হটেন। এরপর আফগান সেনাবাহিনীর আরও তিনটি পোস্ট—নার্গসার, তুর্কমানজাই ও পোলসেন—এ হামলা চালানো হয়। এসব পোস্টের মধ্যে নার্গসারে অন্তত চারটি ট্যাংক এবং তুর্কমানজাই পোস্টে আরও দুটি ট্যাংক ধ্বংস করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানি বাহিনী। পোলসেন পোস্টের কাছাকাছি অবস্থিত একটি জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবিরও ধ্বংস করা হয়েছে।

পাকিস্তানের এক সামরিক কর্মকর্তা জিও নিউজকে জানান, পাল্টা হামলার মুখে আফগান সেনারা টিকতে না পেরে পোস্ট ত্যাগ করেন। একটি পোস্টে সেনারা সাদা পতাকা উড়িয়ে আত্মসমর্পণের ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন।

এর আগে চলতি মাসের ১১ তারিখে আফগান বাহিনী পাকিস্তানের আঙ্গুর আড্ডা, বাজাউর, কুররম, দির, চিত্রাল ও বারামচা এলাকায় হামলা চালায়। তখনও পাকিস্তানি সেনারা পাল্টা জবাব দেয়। সেই সংঘাতে প্রায় ২০০ আফগান সেনা এবং পাকিস্তানের ২৩ সেনা নিহত হন বলে জানায় পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ দপ্তর (আইএসপিআর)।

দুই প্রতিবেশী দেশের সীমান্তে এমন সংঘাত নতুন নয়। তবে সাম্প্রতিক এই তীব্র লড়াই পরিস্থিতিকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলেছে। সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত বেসামরিক মানুষ আতঙ্কে ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিচ্ছেন। কূটনৈতিক মহল আশঙ্কা করছে, সংলাপ শুরু না হলে এই উত্তেজনা দুই দেশের সম্পর্ককে আরও অবনতির দিকে ঠেলে দেবে।