
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ভারত সরকারকে আবারও চিঠি পাঠাবে বাংলাদেশ।
সোমবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, “তাদের অবশ্যই ফেরত আনতে হবে। যেহেতু আদালত শাস্তি দিয়েছে, তাই আমরা ভারতকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবো।”
তিনি জানান, চিঠি পাঠানোর দুটি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে-
১) অফিসিয়াল নোটার্ভার্বাল পাঠানো হবে, যা স্থানীয়ভাবে ঢাকায় ভারতীয় মিশনের হাতে তুলে দেওয়া যেতে পারে।
২) একই সঙ্গে নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের মিশনের মাধ্যমে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নথিটি হস্তান্তর করা হবে।
এর আগে সোমবার দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাকে দুই অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড, আসাদুজ্জামান খান কামালকে এক অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড এবং রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায়ে বলেন-ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প ছিল না।
রায় ঘোষণার সময় আদালতে নিহতদের কয়েকজন পরিবারের সদস্য উপস্থিত ছিলেন। ট্রাইব্যুনাল জানায়, তিন আসামির বিরুদ্ধেই প্রমাণিত হয়েছে যে তাঁরা জুলাই অভ্যুত্থানের সময় নির্বিচারে ও নৃশংসভাবে মানুষ হত্যার নির্দেশ ও পরিকল্পনা করেছিলেন।
মামলার পলাতক দুই আসামি শেখ হাসিনা ও কামাল বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। গ্রেপ্তার একমাত্র আসামি মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন এবং দোষ স্বীকার করায় কম শাস্তি পেয়েছেন।
গত বছরের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এটাই প্রথম কোনো বড় মামলার রায়। জুলাই–আগস্টের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ১০ জুলাই আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। এ সময় ‘সুপিরিয়র কমান্ড রেসপন্সিবিলিটি’, ‘জয়েন্ট ক্রিমিনাল এন্টারপ্রাইজ’সহ পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়। প্রসিকিউশন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের ওপর মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ- সংক্রান্ত অডিও টেপসহ নানা প্রমাণ জমা দেয়।
গত ১ জুন অভিযোগ আমলে নিয়ে শেখ হাসিনা ও কামালের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। গত বছরের ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত তাঁর সরকারের কঠোর দমননীতিতে দেড় হাজারের বেশি মানুষ নিহত হওয়ার অভিযোগ উঠেছিল।






















