
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোট আয়োজনের ঘোষণা এলেও প্রয়োজনীয় আইন (অধ্যাদেশ) জারি না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন (ইসি) এ বিষয়ে কোনো কার্যক্রম শুরু করতে পারবে না বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, “গণভোট আইন হওয়ার পরই আমরা কাজ শুরু করব। তার আগে কীভাবে হবে, কতটি ব্যালটবক্স লাগবে- এসব বিষয়ে কিছুই বলা সম্ভব নয়।”
বুধবার বিকেলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের চতুর্থ দিনের শেষ সভায় সিইসি এসব কথা বলেন। সংলাপে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা বারবার গণভোটসংক্রান্ত প্রশ্ন তোলায় তিনি এই ব্যাখ্যা দেন।
সিইসি বলেন, “রেফারেন্ডাম আয়োজনের জন্য আগে আইন লাগবে। প্রধান উপদেষ্টা ঘোষণা দিয়েছেন, কিন্তু সেই ঘোষণার পর একটি অর্ডারের মাধ্যমে গণভোট আইন করতে হবে। এই আইনেই নির্দিষ্ট করা থাকবে- কী বিষয়ে গণভোট হবে এবং নির্বাচন কমিশন কীভাবে ভোট আয়োজন করবে।”
তিনি ১৯৯১ সালের গণভোটের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, “সেটি যেমন আইনের ভিত্তিতে হয়েছিল, এবারও আইন না হলে কোনো প্রস্তুতি শুরু করা সম্ভব নয়। আইন হওয়ার পরই আমাদের ওপর দায়বদ্ধতা আসবে।”
বুধবারের সংলাপে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিল। এ ছাড়া আরও পাঁচটি দলের সঙ্গে ইসি আলোচনা করে। চার দিনে মোট ৪৮টি দলের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে কমিশন।
রাজনৈতিক পরিবেশের জটিলতার কথা উল্লেখ করে সিইসি বলেন, “রাজনীতিবিদদের টাইম মেনে চলানো কঠিন- এটা হেসেই বলছি। তবে রাজনৈতিক হিট ওয়েভ আমরা বুঝি। পাকিস্তান আমল থেকে নির্বাচন দেখে আসছি, অভিজ্ঞতা কম নয়। আমাদের সব কাজ করতে হচ্ছে দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতা মাথায় রেখে।”
তিনি জানান, নানা চ্যালেঞ্জ থাকলেও এগুলো উপেক্ষা করা সম্ভব নয়। “যেকোনো কমিশনকে, এমনকি আপনাদের (রাজনীতিবিদদের) বসালেও বাস্তবতাকে এড়িয়ে চলা সম্ভব নয়। তাই স্মার্টলি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতেই হবে।”
সিইসি বলেন, সংস্কার কমিশন কাজ শুরু করেছে গত বছর, আর ঐকমত্য কমিশন এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে যাত্রা শুরু করে। অক্টোবরে তারা প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। কিন্তু রেফারেন্ডামের সুপারিশ বাস্তবায়ন এখনও অপেক্ষমাণ। “সব কিছু যদি অপেক্ষায় রাখতাম, তাহলে হয়তো নির্বাচন আয়োজনই সম্ভব হতো না।”
ইসি জানিয়েছে, দুপুর ২টা থেকে ৪টার সংলাপে বিএনপি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি), নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি (বিআরপি) এবং বাসদ (মার্কসবাদী)-এর প্রতিনিধিরা অংশ নেন।























