রবিবার । ডিসেম্বর ৭, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক প্রবাস ৫ মে ২০১৫, ৯:০২ পূর্বাহ্ন
শেয়ার

থাই জঙ্গলে নৃশংসতা : মানব পাচারের ‘মূল হোতা’ গ্রেফতার


thailand

জানুয়ারী থেকে এখন পর্যন্ত মানবপাচারের অভিযোগে ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। ফোন রেকর্ড বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে মালয়েশিয়া-বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড থেকেই এ মানবপাচার চক্রটি নিয়ন্ত্রিত হয়।

আনচন বলেন, খুন, মানব পাচার, অবৈভাবে সীমান্ত অতিক্রম করার বিষয়ে রোহঙ্গা মুসলিম আনোয়ারের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করছে পুলিশ। জঙ্গলে পাওয়া গণকবরের আশপাশ থেকে ডিএনএ ও সংগ্রহ করছে পুলিশ, যাতে সেখানে আনোয়ারের উপস্থিতির বিষয়ে নির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়।

ডেইলি মেইল অনলাইন তাদের নিজস্ব অনুসন্ধানের বরাতে বলছে, ২০১২ সালে থেকে এখন পর্যন্ত এক লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম সীমান্ত পাড়ি দিয়ে প্রথমে মিয়ানমার থেকে থাইল্যান্ড এবং পরে মালয়েশিয়া যায়। এ যাত্রায় তারা সমুদ্রপথ ব্যাবহার করে এবং অনেক সময় মাসের পর মাস বিভিন্ন জঙ্গলে ক্যাম্প করে থাকতে হয়।

মানবাধিকার সংগঠন ফরটিফাই গ্রুপের একিসকিউটিভ ডিরেক্টরেএমি স্মিথ বলেন, এই শুক্রবারে ঙ্গলে যে ক্যাম্পটির সন্ধান পাওয় গেছে, সেটি এ অঞ্চলে বহু ক্যাম্পের মধ্যে মাত্র একটি। এরকম আরো বহু ক্যাম্প দক্ষিণ থাইল্যান্ডের জঙ্গলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। জঙ্গলে এই ধরনের কোনো ক্যাম্পের সন্ধান এটাই প্রথম। থাই কর্তৃপক্ষের উচিত হবে, যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে এসব উচ্ছেদ করা।

শুক্রবার মালয়েশিয়া সীমান্ত থেকে কয়েকশ মিটার ভেতরের এই ক্যাম্পটিতে পুলিশের সাথে গিয়েছিলেন রয়টার্সের একজন রিপোর্টার। তিনি দেখেছেন, ক্যাম্পটিতে প্রচুর পরিমাণে বাশের লাঠি এবং পাইপ আছে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে এগুলো ফেলে রেখেই পাচারকারিরা পালিয়ে যায়। এসব দেখে ধারণা করা যায়, পাচারকারিরা অভিবাসীদের এসব লাঠি দিয়ে নিয়মিত মারধর করতো। ক্যাম্পে যেসব মরদেহ পাওয়া গেছে তাদের শরীরেও লাঠি দিয়ে পেটানোর চিহ্ন দেখেছেন এ রিপোর্টার। এছাড়া উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়া আরো দুজন পুলিশ সদস্য ও রয়টার্সকে একই ধরনের কথা বলেছেন।

সাবেক এক মানবপাচারকারী, যে পুলিশকে ক্যাম্পটি চেনাতে সাহায্য করেছে, তিনি বলেছেন, ফোনে পরিবারের কাছে টাকা চাওয়ার জন্য অভিবাসীদের নিয়মিত মারধর করা হয়। আর যারা পালিয়ে যেতে চায়, তাদেরকে তো হত্যা করা হয়।

এ ক্যাম্প থেকে পালিয়ে আসা একজন (তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়নি। তিনি এখন পুলিশ হেফাজতে আছেন) বলেছেন, গত ১০ মাসে ক্যাম্পে থাকাকালীন সময়ে অন্তত ১৭ জনকে হত্যা করতে দেখেছেন তিনি। এমনকি মাত্র দুই ঘন্টার ব্যবধানে চারজনকে পিটিয়ে মেরে ফেলতে দেখেছেন তিনি।
তবে পুলিশ বলছে, মরদেহে নির্যাতনের চিহ্ন তারা পায়নি।

এ ক্যাম্পেই ২৫ বছর বয়সী কাজিম নামে এক যুবকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তাকে মুক্তির জন্য মুক্তিপণও দিয়েছিলো পরিবার। কিন্তু তারপরও মুক্তি না দেয়ায় পুলিশের দ্বারস্থ হয় তার পরিবার। পুলিশের কাছে অভিযোগ দেয়ায় কাজিমকে পিটিয়ে হত্যা করে পাচারকারিরা। হত্যার সময় কাজিমের একত আত্নীয়কে ফোন করে ফোনটি কাজিমের মুখের সামে ধরে তারা। কাজিমের সে আত্মীয় রয়টার্সকে বলেছেন, ফোনে কাজিম বলছিলো, তারা আমাকে মেরে ফেলছে। আপনারা কি করলেন আমার জন্য?

কাজিমের আত্মীয়ের এ অভিযোগের ব্যাপারে থাই পুলিশ বলছে, তারা বিষয়টি তদন্ত করে দেখবে।