জঙ্গি কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ২৭ বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করে ২৬ জনকে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে সিঙ্গাপুর। বুধবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
দেশটির শীর্ষ গণমাধ্যম স্ট্রেইট টাইমসের এক সচিত্র প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, এই বাংলাদেশিদের সবাই পুরুষ। সিঙ্গাপুরে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে তারা কাজ করতেন। গত নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ১ ডিসেম্বরের মধ্যে ওই ২৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হলেও সিঙ্গাপুরের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বুধবার এ বিষয়ে বিস্তারিত জানায়। ফেরত না পাঠানো বাকি এক বাংলাদেশি ওই গবেষণা দলের সদস্য নয় বলে জানিয়েছে গণমাধ্যমটি। তাকে ধীরে ধীরে চরমপন্থার দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তিনি বর্তমানে সিঙ্গাপুরের কারাগারে রয়েছেন। তার সাজার মেয়াদ শেষ হলে দেশে পাঠানো হবে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘তদন্তে দেখা গেছে, গ্রেপ্তাররা আল কায়েদা ও ইসলামিক স্টেটের মতো জঙ্গি সংগঠনের মতাদর্শে বিশ্বাসী। তাদের মধ্যে কয়েকজন বিদেশে জিহাদে অংশ নেয়ার কথা ভাবছিল। তবে সিঙ্গাপুরের ভেতরে সন্ত্রাসী হামলা পরিচালনার কোনো পরিকল্পনা তাদের ছিল না।’
গ্রেপ্তারকৃতরা সবাই আল কয়েদার সাথে সম্পৃক্ত মার্কিন-ইয়েমেনী জঙ্গি আনওয়ার আল-আওলাকির পন্থায় জঙ্গিবাদ প্রচারের কাজ করতেন। উল্লেখ্য, জঙ্গি আনওয়ার আল-আওলাকি ২০১১ সালে ইয়েমেনে এক ড্রোন হামলায় মারা যান। তিন আল কায়েদার সদস্য ছিলেন।
ওইসব সন্দেহভাজন জঙ্গিরা চরমপন্থা উসকে দেয়ার লক্ষ্যে একটি গবেষণা দল তৈরি করেছিলেন। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে জিহাদি বই এবং শিশুদের জিহাদি প্রশিক্ষণের ভিডিও ফুটেজ উদ্ধার করেছে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার (এমএইচএ) সদস্যরা। এছাড়া কয়েকজনের কাছ থেকে কিভাবে ‘গোপনে হত্যাকাণ্ড’ চালাতে হয় সে বিষয়ে নির্দেশনা-সংবলিত কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
এমএইচএ’র এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘তারা নিজেদের দলের সদস্য বাড়াতে খুব সুক্ষভাবে বাংলাদেশিদের তাদের দলে ভিড়ানোর কাজ করতো।’
তাদের একজন জানায়, ধর্মের স্বার্থে অস্ত্র ধারণ করে জিহাদে অংশ নেয়ায় তারা বিশ্বাস করতো। অনেকেই মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংঘাতে অংশ নেয়ার কথা ভাবছিল। বাংলাদেশ সরকার কিছু ইসলামিক রাজনৈতিক দলের নেতাদের শাস্তি দেয়ায় সরকারের ওপর রয়েছে তাদের ব্যাপক ক্ষোভ।
সিঙ্গাপুরের আইন অনুসারে, দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা, জাতি এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য হুমকি হতে পারে এমন কাজ করা প্রত্যেক ব্যক্তির চূড়ান্ত শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।





























