
অনেকেই এখন স্থায়ী চাকরির বাইরে গিয়ে ডেভেলপমেন্ট কমিউনিকেশনে ভালো ইনকাম করছেন, বিশেষ করে
কনসালটেন্সি, শর্ট টার্ম প্রজেক্ট, বা ফ্রিল্যান্স কাজের মাধ্যমে। কীভাবে শুরু করবেন?
পরিচিতি আর নেটওয়ার্ক
নেটওয়ার্ক নিয়ে আমি আগেও লিখেছি আবারো বলছি, ছোট ছোট প্রজেক্টে কাজ বা কনসালটেন্সির বেশিরভাগ আসে রেফারেল আর নেটওয়ার্ক থেকে। ধরুন, আপনার কোনো সহকর্মী কোনো প্রজেক্টে রাইটার বা ভিডিও প্রোডাকশনের জন্য কাউকে খুঁজছে, এর জন্য বিজ্ঞাপন দিয়ে কাউকে নেয়ার সময় নেই। সেই ক্ষেত্রে আপনার নাম, আপনার সহকর্মী সাজেস্ট করবে যদি আপনার কাজ সম্পর্কে সে জানে আর আপনার রেপুটেশন ভালো থাকে। ঘুরেফিরে সেই নেটওয়ার্কিং।
এ রকম অনেক অনেক উদাহরণ আছে, যারা ছোট ছোট কনসালটেন্সি করে এখন নিজেই কনসালটেন্সি ফার্ম খুলে ফেলছে। সুতরাং শুধু চাকরির পিছনে না দৌড়িয়ে নিজের স্কিলস আর স্ট্রং নেটওয়ার্কিং এর উপর সময় দিলে, তার রেজাল্ট খারাপ হওয়ার কথা না |
স্মার্ট ফোন, স্মার্টলি ব্যবহার করুন
তবে রেফারেন্স বা নেটওয়ার্কিং ছাড়াও যে সম্ভব না, তাও কিন্তু না। আপনি যদি আপনার স্মার্ট ফোন, স্মার্টলি ব্যবহার করতে পারেন তাহলে কনসালটেন্সি কাজ করার সুযোগও কিন্তু তৈরি হয়। এই যেমন স্মার্ট ফোনে শুধু রিল্স দেখে বা গান শুনে সময় ব্যয় না করে, সোশ্যাল মিডিয়াকে ঠিক মত ব্যবহার করলে অনেক কনসালটেন্সির সুযোগ আসে। এই জন্য ডেভেলপমেন্ট সেক্টরের বিভিন্ন গ্ৰুপ যেমন Desperately Seeking Development Expert বা Bangladesh Development Communication Forum (BDCF) এ কানেক্ট থাকা পাশাপাশি নিজের কাজ তুলে ধরার জন্যও স্মার্ট ফোন আর সোশ্যাল মিডিয়াকে স্মার্টলি ব্যবহার করা। UN Volunteers এও অনলাইনে কাজ করার অনেক সুযোগ থাকে, এছাড়া লিংকডইন তো আছেই ।
তবে ওই যে বললাম, স্মার্ট ফোনকে স্মার্টলি ব্যবহার করা শুরু করতে হবে, কারণ Facebook আর LinkedIn এখন আপনার ডিজিটাল ভিজিটিং কার্ড ।
দরকার পোর্টফোলিও
কনসালটেন্সির জন্য আপনার কাজের স্যাম্পল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেমন আপনি যদি ডিজাইনার হয়ে থাকেন তাহলে ডেভেলপমেন্ট সেক্টরে কি ধরনের ডিজাইনের কাজ বেশি দরকার হয় তা জানতে হবে এবং তার সাথে মিল রেখে আপনার পোর্টফোলিও তৈরী করতে হবে। এসব Google Drive বা নিজের ওয়েবসাইটে রাখুন, যাতে প্রয়োজনে এক ক্লিকেই শেয়ার করা যায়।
ছোট কাজ দিয়ে শুরু করুন
শুরুতে বড় কনট্র্যাক্ট এর আশা না করে ছোট প্রজেক্ট যেমন একদিনের ট্রেনিং অর্গানাইজ করা বা রিপোর্ট রিভিউ করা বা সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য একটা ক্যাম্পেইনে সাহায্য করা অথবা একটা ছোট ভিডিও তৈরি করে দেয়া, ইত্যাদি, এই ধরনের কাজ খোঁজা। এই সব কাজ ছোট মনে হলেও, এই সব কাজের মাধ্যমেই বিশ্বাস তৈরি হয়, আর ধাপে ধাপে ক্লায়েন্টের আস্থা বাড়ে। এরকম উদাহরণ অনেক।
নিজের রেট ঠিক করা
কনসালট্যান্সিতে রেট ঠিক করা একটু সেন্সিটিভ। নিজের সম্পর্কে অতি উচ্চ ধারণা যেমন ভাল না তেমনি কোনো ধারণা না থাকাও ভাল না। নিজের মার্কেট রেট নিজেকে ঠিক করতে হবে, যুক্তিসংগত ভাবে। এর জন্য বিভিন্ন সংস্থার রেট সম্পর্কেও খোঁজ খবর রাখতে হয়। TOR, পেমেন্ট শর্ত আর ডেলিভারেবল সব স্পষ্ট বুঝে তারপরেই রেট ফাইনাল করুন।
ডেভেলপমেন্ট কমিউনিকেশন্স এ কোন ধরনের কনসালটেন্সির প্রয়োজন?
ডিজিটাল কমিউনিকেশন, ভিডিও এডিটিং, ফটোগ্রাফি, রাইটার, ডিজাইনার এই ধরনের স্কিলের চাহিদা বেশি। যেখানে ফুল টাইম দিতে হয় না কিন্তু ছোট ছোট করে বার বার প্রয়োজন হয়।
নিজের ব্র্যান্ড তৈরি করুন
আপনার কাজই আপনার পরিচয়। সময়মতো কাজ শেষ করুন, কমিটমেন্ট রাখুন আর কোয়ালিটির সাথে কোনো কম্প্রোমাইজ না, তাহলেই ক্লায়েন্ট হ্যাপি। আর ক্লায়েন্ট হ্যাপি থাকলে ডাক আসতেই থাকবে ।
শেষ কথা হলো ছোট থেকে শুরু হোক, পরিশ্রম, মেধা আর কাজের প্রতি কমিটমেন্ট ঠিক থাকলে একসময় আপনিই আপনার ব্র্যান্ড।
মোঃ আব্দুল কাইয়ুম: হেড অব কমিউনিকেশনস, ইউএনডিপি বাংলাদেশ।