সোমবার । ডিসেম্বর ৮, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক আদালত ১৫ জুলাই ২০২৫, ৮:১৫ অপরাহ্ন
শেয়ার

বিনা বিচারে ৩০ বছর জেলে, অবশেষে মুক্তি পেলেন কানু মিয়া


kanu-miaমামলার বিচার হয়নি, হয়নি কোনো সাজাও—তবু কারাগারে কাটিয়েছেন দীর্ঘ ৩০ বছর দুই মাস ১৯ দিন। অবশেষে জামিনে মুক্তি পেলেন হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার সিংহগ্রাম গ্রামের কানু মিয়া।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় তিনি হবিগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান। বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা লিগ্যাল এইডের আইনজীবী এম এ মজিদ।

১৯৯৫ সালের ২৫ মে ঘুমন্ত অবস্থায় মাকে কোদাল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক কানু মিয়া। গ্রামবাসী তাকে আটক করে পুলিশে দেয়। পরদিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি। এরপর থেকে শুরু হয় তার দীর্ঘ বন্দিজীবন।

শুরুর দিকে স্বজনরা খোঁজ নিলেও পরে সবাই তাকে ভুলেই যান। এমনকি গ্রামের নতুন প্রজন্ম জানতই না কানু মিয়া এখনো জীবিত আছেন।

দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে কানু মিয়া কারাভোগ করছেন— এ তথ্য হবিগঞ্জ জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার ও সিনিয়র সহকারী জজ মুহম্মাদ আব্বাছ উদ্দিন জানার পর কানু মিয়ার আইনগত প্রতিকার নিশ্চিতে উদ্যোগ নেন। খুঁজে বের করেন মামলার বাদী মনু মিয়াকে। পরে মনু ও তার আরেক ভাই নাসু মিয়াকে লিগ্যাল এইড অফিসে ডাকা হয়। জামিনের সরকারি উদ্যোগের কথা শুনে তারা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন এবং সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

লিগ্যাল এইডের প্যানেলভুক্ত আইনজীবী অ্যাডভোকেট এম এ মজিদ সাংবাদিকদের বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীন আসামির জামিন একটি স্পর্শকাতর বিষয়। বিশেষ করে তিনি হত্যা মামলার একমাত্র আসামি। কানু মিয়ার বিচারিক কার্যক্রম হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে বলে জানা গেছে। সব দিক বিবেচনায় নিয়ে গতকাল সোমবার হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে কানু মিয়ার জামিন আবেদন করা হয়। জেলা ও দায়রা জজ জেসমিন আরা বেগম সেই জামিন মঞ্জুর করেন। পরে আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।

আইনজীবী মজিদ জানান, দীর্ঘদিন পর হলেও জামিনে মুক্ত হয়েছেন কানু মিয়া; যা নিয়ে তার স্বজনরা উচ্ছ্বসিত।

কানু মিয়ার ভাই মনু মিয়া বলেন, তাদের ভাই মানসিক ভারসাম্যহীন। দীর্ঘদিন পর তিনি কারাগার থেকে মুক্ত হয়েছেন। এতে সবাই খুশি।