
জুলাই আন্দোলনের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়েরকৃত সাতটি পৃথক মামলায় ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, ডা. দীপু মনি, আমির হোসেন আমু, সালমান এফ রহমানসহ মোট ৪৫ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করতে তিন মাস সময় দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
রোববার (২০ জুলাই) ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদেশে আগামী ১৫ অক্টোবর-এর মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সময় চেয়ে আবেদন করলে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
এদিন সকালে আনিসুল হক, দীপু মনি, আমু, সালমান এফ রহমান, জুনাইদ আহমেদ পলকসহ ৩৯ জন আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। বাকি অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন—ফারুক খান, আব্দুর রাজ্জাক, কামাল আহমেদ মজুমদার, গোলাম দস্তগীর গাজী, কামরুল ইসলাম, সাবেক উপদেষ্টা তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরী, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন, জাসদের হাসানুল হক ইনু, সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব জাহাঙ্গীর আলম।
এর আগে ২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর একই ঘটনায় দায়ের হওয়া দুটি মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত দুই মাসের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল। পরে সময় আরও দু’বার বাড়ানো হয়। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে—বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর গুলি, হত্যার নির্দেশ এবং পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন অভিযুক্তরা।
অভিযুক্ত সাবেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু অভিযোগ করেন, আদালতের অনুমতি ছাড়াই গোয়েন্দারা কারাগারে গিয়ে তার ভয়েস রেকর্ড করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত হচ্ছে।’
তবে এই অভিযোগ নাকচ করে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, ট্রাইব্যুনালের নির্দেশনা অনুযায়ী তদন্তকারীরা যে কোনো আসামির কণ্ঠস্বর পরীক্ষা করতে পারেন। তার কথায়, “আসামি নিজেই বারবার কথা বলে বিচার কাজে বিঘ্ন ঘটাচ্ছেন, অথচ তিনি চাইলে তার আইনজীবীর মাধ্যমেও বক্তব্য দিতে পারেন।”
এ সময় ট্রাইব্যুনাল পর্যবেক্ষণে জানায়, ন্যায়বিচারের স্বার্থে প্রয়োজনে আসামি ও তাদের স্বজনদের বক্তব্যও শোনা হবে।