
বিশ্বখ্যাত ফ্যাশন ম্যাগাজিন ভোগ-এর আগস্ট সংখ্যায় একটি এআই-তৈরি মডেল ব্যবহার করে প্রকাশিত বিজ্ঞাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পাঠকরা। দুই পৃষ্ঠাজুড়ে ছাপা এই বিজ্ঞাপনটি দিয়েছে পরিচিত ফ্যাশন ব্র্যান্ড ‘গেস’, আর এটি তৈরি করেছে এআই মার্কেটিং সংস্থা ‘সেরাফিন ভ্যালোরা’।
প্রথম ছবিতে দেখা যায়, স্বর্ণকেশী এক মডেল হালকা নীল রঙের ফুলেল প্লেস্যুট পরে হাতে কফির কাপ ধরে বসে আছেন। অন্য ছবিতে সেই একই এআই-তৈরি চরিত্রকে দেখা যায় নীল দেয়ালের পাশে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন, পরনে সাদা-কালো চেভরন প্রিন্টের পোশাক এবং সাথে মানানসই ‘গেস’ ব্যাগ।
বিজ্ঞাপনটিতে সূক্ষ্ম হরফে লেখা ছিল, ‘সেরাফিন ভ্যালোরা আন এআই’—যার মাধ্যমে পাঠকরা বুঝতে পারেন এটি একটি সম্পূর্ণ এআই-নির্মিত মডেল।
‘সেরাফিন ভ্যালোরা’ একটি এজেন্সি যারা এডিটোরিয়াল মানের এআই-নির্ভর মার্কেটিং ক্যাম্পেইন এবং সিনেম্যাটিক ভিডিও ডিজাইন করে। তাদের কাজ ‘হারপারস বাজার’ ও ‘এলি ম্যাগাজিন’-এও প্রকাশিত হয়েছে।
টুইটার-এ একজন ক্ষুব্ধ পাঠক লেখেন, “ভীতিকর। এআইকে এই পথে নিয়ে যাওয়া উচিত নয়… হতবাক!” আরেকজন লেখেন, “দারুণ! এখন সৌন্দর্যের নতুন মান হবে এমন কিছু যা বাস্তবে অর্জনযোগ্যই নয়, কারণ এটা বাস্তব নয়।”
তবে সবার দৃষ্টিভঙ্গি এতটা নেতিবাচক ছিল না। একজন ইতিবাচক মন্তব্যে লেখেন, “ভবিষ্যৎ এসে গেছে। এতে সময় কম লাগে এবং খরচও অনেক কম।”

এ বিষয়ে মতামত জানতে ভোগ, ‘গেস’ এবং ‘সেরাফিন ভ্যালোরা’-র সঙ্গে যোগাযোগ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
এদিকে, প্লাস-সাইজ মডেল ফেলিসিটি হেওয়ার্ড, যিনি এক দশকের বেশি সময় ধরে ফ্যাশন জগতে রয়েছেন, দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টকে বলেন—এ ধরনের এআই বিজ্ঞাপন ভবিষ্যতে ফটোশুট সংশ্লিষ্ট পেশাজীবীদের—যেমন মেকআপ আর্টিস্ট, চুলের স্টাইলিস্ট, সেট ডিজাইনার, সহকারী ও কেটারারদের চাকরি হুমকির মুখে ফেলতে পারে।
তিনি ভোগ-এর সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, “এতে করে ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে বৈচিত্র্য নিশ্চিত করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে চালানো প্রচেষ্টা বিফলে যেতে পারে।”
এই বিতর্ক এমন এক সময়ে সামনে এলো, যখন ওপেন এআই এবং ভোগ-এর প্রকাশক কন্ডে নাস্ট একটি বহু বছরের অংশীদারিত্বে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। এই চুক্তির ফলে ভোগ-এর কনটেন্ট এখন চ্যাটজিপিটির সার্চ রেজাল্টেও দেখা যাবে।
কন্ডে নাস্ট-এর সিইও রজার লিঞ্চ নিউ ইয়র্ক টাইমস-এ এক ইমেইলে বলেন, “নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ করা এবং যেখানে পাঠক আছে সেখানে পৌঁছানো আমাদের জন্য এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
সূত্র: দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট