মালয়েশিয়ায় শ্রম পারমিটের অপব্যবহারের অভিযোগে ৩০৬ জন বাংলাদেশিকে আটক করেছে দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ। বুধবার (৬ আগস্ট) সকালে বুকিত মের্তাজামের সিম্পাং আমপাট এলাকায় এক কারখানায় সমন্বিত অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন মহাপরিচালক দাতুক জাকারিয়া শাবান। তিনি জানান, স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হওয়া অভিযানে মোট ৭৪৯ জন বিদেশি কর্মীর কাগজপত্র যাচাই করা হয়। এর মধ্যে ৩০৭ জনকে ইমিগ্রেশন আইনের অধীনে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে শনাক্ত করা হয়েছে।
জাকারিয়া শাবান বলেন, আটককৃতদের বয়স ২০ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে এবং তাদের মধ্যে ৩০৬ জন বাংলাদেশি এবং একজন নেপালি। আটককৃতরা পরিষ্কারকর্মী ও নির্মাণ খাতের পারমিট পেয়েও কারখানায় কাজ করছিলেন, যা মালয়েশিয়ার শ্রম আইনের লঙ্ঘন। এ ছাড়া কিছুজনের পারমিটের মেয়াদ শেষ, কারও ভ্রমণ নথি বৈধ নয়, আবার কেউ অননুমোদিত স্থানে কাজ করছিলেন।
এ ঘটনায় পারমিটের অপব্যবহারকারী এজেন্টদের কৌশলও উন্মোচিত হয়েছে বলে জানানো হয়। একাধিক এজেন্টের মাধ্যমে খাত ভিন্ন করে শ্রমিকদের কারখানায় পাঠানো হচ্ছিলো বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে।
অভিযানে ইমিগ্রেশন বিভাগের পাশাপাশি জাতীয় নিবন্ধন বিভাগ (জেপিএন), সেবারাং পেরাই সিটি কাউন্সিল (এমবিএসপি) এবং পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য বিভাগ (জেকেকেপি) অংশ নেয়।
আটককৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে নিকটবর্তী জাওয়ি ইমিগ্রেশন ডিটেনশন ডিপোতে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে এদের বিরুদ্ধে ইমিগ্রেশন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অভিযানের সময় এক বাংলাদেশি জানান, তিনি ২০২৩ সালে এক এজেন্টের মাধ্যমে ২০ হাজার রিঙ্গিত (প্রায় ৫ লাখ টাকা) দিয়ে মালয়েশিয়ায় আসেন। কিন্তু এখন সে পারমিট তাকে কোনও কাজের নিশ্চয়তা দিতে পারছে না, বরং বিপদেই ফেলেছে।
সম্প্রতি মালয়েশিয়ায় বারবার বিদেশি শ্রমিক আটকের ঘটনা ঘটছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় সংখ্যায় বাংলাদেশিদের জড়িত থাকা এখন উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এজেন্টদের নিয়ন্ত্রণহীনতা ও সরকারের নজরদারির অভাবেই এই জটিলতা বাড়ছে। এ অবস্থায় বিদেশগামী শ্রমিকদের সতর্কতা ও সচেতনতা জরুরি, পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকেও দ্রুত কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ উঠেছে।