
ড. শহিদুল আলম
একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য আলোকচিত্রী ও সমাজকর্মী ড. শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের মামলাটি হাইকোর্ট বাতিল করে দিয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন।
এর ফলে শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে চলমান মামলাটি বাতিল হয়ে গেলো বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
এর আগে ২০২৪ সালের ৪ নভেম্বর এ মামলার তদন্ত কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এ মামলা কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছিলেন আদালত।
আদালতে শহিদুল আলমের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার প্রিয়া আহসান চৌধুরী।
২০১৮ সালের ৫ আগস্ট শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেওয়ার পর শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা করা হয়। মামলার অভিযোগ ছিল, শহিদুল আলম ফেসবুকের মাধ্যমে “কল্পনাপ্রসূত অপপ্রচার” চালাচ্ছেন। মামলায় আটক হয়ে কারাগারেও থাকতে হয় বিশিষ্ট এই আলোকচিত্রী ও সমাজকর্মীকে।
কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতও শহিদুল আলমের জামিন আবেদন নাকচ করেছিলেন। এরপর ১৬ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন তিনি। পরে ১৫ নভেম্বর হাইকোর্ট এ মামলায় তাকে জামিন দিয়েছিলেন। প্রায় সাড়ে তিন মাস কারাগারে থাকার পর ওই বছরের ২১ নভেম্বর জামিনে মুক্তি পান শহিদুল আলম।
ড. শহিদুল আলম একজন আলোকচিত্রশিল্পী, সাংবাদিক ও সমাজকর্মী। তিনি দৃক পিকচার লাইব্রেরির প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ২০১৮ সালে টাইম ম্যাগজিনের টাইম বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব ২০১৮ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। এছাড়াও, দেশ-বিদেশে তিনি অনেক সম্মাননা ও পুরস্কার পেয়েছেন।
শহিদুল আলমকে গ্রেপ্তারের পরে দেশে-বিদেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়। গ্রেপ্তারের পরপরই নিঃশর্তে শহিদুলের মুক্তির দাবিতে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ, আইন ও সালিশ কেন্দ্র, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, রিপোর্টার্স উইথআউট বর্ডার্সের মত দেশি বিদেশি ২৪টি সংস্থা বিবৃতি দেয়। এছাড়া শহিদুল আলমের মুক্তির দাবি সংবলিত এক বিবৃতিতে ১১ জন নোবেল বিজয়ী ও ১৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক সই করেন।