উয়েফা সুপার কাপ ফাইনালে দুই গোলে পিছিয়ে থেকে অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তন ঘটিয়ে টটেনহ্যাম হটস্পারকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতেছে পিএসজি। এ জয়ে পিএসজি তাদের সংগ্রহে আরও একটি বড় ইউরোপিয়ান ট্রফি যুক্ত করলো।
বুধবার (১৩ আগস্ট) রাতে ইতালির উদিনে ব্লু এনার্জি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে ৮৪ মিনিট পর্যন্ত ২-০ গোলে এগিয়ে থেকে জয়ের সুবাস পাচ্ছিল টটেনহ্যাম। কিন্তু শেষ বাঁশি বাজার ঠিক আগ মুহূর্তে ম্যাচে সমতা ফেরায় পিএসজি। লড়াই গড়ায় সরাসরি টাইব্রেকারে। সেখানে ৪-৩ গোলের জয় পায় লুইস এনরিকের দল।
ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলছিল টটেনহ্যাম। ৩৯তম মিনিটে ডাচ ডিফেন্ডার মিকি ফন দে ফেন দলের হয়ে প্রথম গোল করেন। বায়ার্ন মিউনিখ থেকে ধারে আসা জোয়াও পালিনিয়ার জোরালো শট পোস্টে লাগলে ফিরতি বল জালে পাঠান ফন দে ফেন।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ব্যবধান বাড়ায় ইংলিশ ক্লাবটি। ৪৮তম মিনিটে পেদ্রো পারোর ফ্রি-কিক থেকে হেডে গোল করেন অধিনায়ক ক্রিস্তিয়ান রোমেরো, যিনি সন হিউং-মিনের বিদায়ের পর প্রথমবার অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে আক্রমণে গতি আনে পিএসজি। ৬৫ মিনিটে একবার বল জালে পাঠালেও অফসাইডের কারণে গোল বাতিল হয়। তবে নির্ধারিত সময়ের পাঁচ মিনিট আগে দক্ষিণ কোরিয়ান উইঙ্গার লি কাং-ইন দুর্দান্ত নিচু শটে ব্যবধান কমান। আর যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে উসমান দেম্বেলের ক্রসে গন্সালো রামোস হেডে গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরান।
টাইব্রেকারে পিএসজির প্রথম শট পোস্টে লাগান ভিতিনিয়া। কিন্তু পরের চারটি শটে তারা সফল হয়। অন্যদিকে, টটেনহ্যামের ফন দে ফেনের শট ঠেকান পিএসজির নতুন গোলরক্ষক লুকাহ শুভালিয়ে, আর মাথিয়াস তেল বল বাইরে মেরে বসেন। ফলে ৪-৩ ব্যবধানে ট্রফি তুলে নেয় পিএসজি।
এই জয়ে প্রথম ফরাসি ক্লাব হিসেবে উয়েফা সুপার কাপ জিতল পিএসজি। কয়েক মাস আগেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ইন্টার মিলানকে হারিয়ে প্রথমবার ইউরোপের সেরা হয়েছিল দলটি। অপরদিকে, গত মে মাসেই ইউরোপা লিগে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে হারিয়ে দীর্ঘ ১৭ বছরের শিরোপা খরা কাটিয়েছিল টটেনহ্যাম। কিন্তু মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে আরেকটি ট্রফির খুব কাছে গিয়েও ব্যর্থ হতে হলো তাদের।
এই ম্যাচটি ছিল টমাস ফ্র্যাঙ্কের অধীনে টটেনহ্যামের প্রথম প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ, এবং রোমেরোর অধিনায়কত্বের সূচনা। তবে উজ্জ্বল সূচনার পর এমন পরাজয় হতাশাজনকই।
ম্যাচজুড়ে ৭৪ শতাংশ বল দখলে রাখলেও প্রথমার্ধে কার্যকর কোনো শট নিতে পারেনি পিএসজি। দ্বিতীয়ার্ধে তারা আটটি শট নেয়, যার তিনটি ছিল লক্ষ্যে। টটেনহ্যাম পুরো ম্যাচে ১৩টি শট নেয়, যার পাঁচটি ছিল লক্ষ্যে।
গত মাসে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের নতুন সংস্করণের ফাইনালে চেলসির কাছে ৩-০ গোলে হারার পর, এবার ইংলিশ দলের বিপক্ষে সুপার কাপের মঞ্চে শেষ হাসি হাসল পিএসজি। নাটকীয় প্রত্যাবর্তন, সাহসী বদলি পরিকল্পনা এবং ঠান্ডা মাথার টাইব্রেকার পারফরম্যান্সে ইউরোপের নতুন মরশুম শুরু করল এক ঐতিহাসিক শিরোপা জয়ে।