
বাংলাদেশে প্রতি ১০ জন স্বাস্থ্য পেশাজীবী মধ্যে প্রায় ৬ জনই আইন লঙ্ঘন করে শিশুদের অপ্রয়োজনীয়ভাবে গুঁড়াদুধ খাওয়ানোর পরামর্শ দেন। বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ উপলক্ষে সোমবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত এক কর্মশালায় এ তথ্য উঠে আসে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও ইউনিসেফের ২০২২ সালের প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে বক্তারা জানান, ৫৭ শতাংশ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী আইন অমান্য করে গুঁড়াদুধ খাওয়াতে উৎসাহিত করছেন। এতে ২০০৩ সালের “মাতৃদুগ্ধ বিকল্প, শিশুখাদ্য ও সরঞ্জামের বিপণন নিয়ন্ত্রণ আইন” এবং ২০১৭ সালের বিধিমালা ব্যাপকভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে।
তথ্য অনুযায়ী, বিভিন্ন কৌশলে গুঁড়াদুধ কোম্পানিগুলো প্রতিবছর প্রায় ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করছে প্রচারণায়।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম বলেন, অপ্রয়োজনীয়ভাবে শিশুদের গুঁড়াদুধ খাওয়ানোর জন্য শুধু চিকিৎসক নন, স্বাস্থ্যকর্মীরাও সমানভাবে দায়ী। এ সমস্যার সমাধানে সবার একসাথে কাজ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, মাতৃদুগ্ধ শুধু শিশুর পুষ্টি নয়, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা গঠনের প্রধান ভরসা। মায়ের স্তন ক্যান্সার, ডিম্বাশয়ের ক্যান্সার ও টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায় মাতৃদুগ্ধদান। মায়ের স্বাস্থ্য ভালো থাকলে শিশুও সঠিকভাবে দুধ পায়। কর্মশালায় নুরজাহান দারিদ্র্য, অপুষ্টি, স্কুল ঝরে পড়া ও বাল্যবিবাহ বৃদ্ধিকে শিশুদের সুস্থ লালনপালনের বড় বাধা হিসেবে উল্লেখ করেন।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মায়ের বয়স কম, পুষ্টিহীনতায় ভোগেন, ফলে শিশুর যথাযথ যত্ন নেওয়া সম্ভব হয় না। এখন মাতৃকালীন ছুটির পাশাপাশি পিতৃকালীন ছুটির কথাও উঠছে। বাবারা যদি সময় দেন, তাহলে এমন ছুটি কার্যকর হতে পারে। কিন্তু অদ্ভুতভাবে চলছে দেশটা—কবে উত্তরণ হবে, জানি না।