রবিবার । ডিসেম্বর ৭, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক জাতীয় ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ৫:৪৫ অপরাহ্ন
শেয়ার

৮০ কোটি টাকা আত্মসাৎ: এস আলমসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা


৮০ কোটি টাকা আত্মসাৎ: এস আলমসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

চাইনিজ রেস্টুরেন্টের নামে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক কাজির দেউড়ি মহিলা শাখা থেকে ৮০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুদক।

সোমবার দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম–১ এ মামলাটি দায়ের করেন দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক আফরোজা হক খান।

দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম–১ এর উপপরিচালক সুবেল আহমেদ গণমাধ্যমকেকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলায় এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ছাড়াও আসামির তালিকায় ব্যাংকটির সাবেক তিন ব্যাংক কর্মকর্তা, ১২ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালিক ও চারজন ব্যবসায়ী রয়েছেন।

আসামিরা হলেন -ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও বিতর্কিত ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সাইফুল আলম, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ ওয়াসেক মো. আলী, এভিপি ও মহিলা শাখার সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক সৈয়দা নাজমা মালেকা এবং হুমায়রা সাঈদা খানম, ব্যবসায়ী মো. আকিজ উদ্দীন, চাইনিজ রেস্টুরেন্ট মেসার্স লা এরিস্টোক্রেসির মালিক নাজমে নওরোজ, জেড. আর. জে সার্ভে অ্যান্ড পরিদর্শক কোম্পানির মালিক মো. শফিকুল করিম, মিশকাত ট্রেড সেন্টারের মালিক মিশকাত আহমেদ, আরিফ হাসনাইন রাবার সাপ্লাইয়ারের মালিক মো. আরিফ হাসনাইন, নূর ট্রেডার্সের মালিক মো. জসিম উদ্দিন, মেসার্স মায়ের দোয়া এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. জুয়েল মিয়া, রিমঝিম শাড়ি হাউজের মালিক মো. জুয়েল মিয়া, মেসার্স আগমন এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. এরসাদ সিকদার, এম. এইচ এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. মনিরুল হক, নিউ বসুন্ধরা জুয়েলার্সের মালিক যিশু বণিক, মেসার্স আল মদিনা স্টিলের স্বত্বাধিকারী মো. অলমগীর ও হক মেরিন ফিশের স্বত্বাধিকারী মো. মাহবুবুল হক। এছাড়া আসামি করা হয়েছে ব্যবসায়ী মোহাম্মদ শাহ আলম, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ও মোহাম্মদ ইকবাল ফারুককে।

দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০১৫ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ব্যাংকের প্রাপ্যতা না থাকা সত্ত্বেও এবং ঋণসীমা অতিক্রম করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে মেসার্স লা এরিস্টোক্রেসি নামের প্রতিষ্ঠানের নামে ১৫২টি ঋণ ডিল দেখিয়ে মোট ৭৯ কোটি ৯৬ লাখ ৬৯ হাজার ৯৮৪ টাকা সরিয়ে নেওয়া হয়। পরে এসব টাকা নগদ, পে-অর্ডার বা অন্য হিসাবে স্থানান্তরের মাধ্যমে গোপনে পাচার করা হয়। গণমাধ্যমে ‘চটপটির দোকানে ২৩৪ কোটি টাকা ঋণ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর দুদক বিষয়টি অনুসন্ধান শুরু করে। প্রথমে নিয়ম মেনে মাত্র কয়েক কোটি টাকার ঋণ। কিন্তু ধীরে ধীরে সেই সীমা অতিক্রম করে কয়েক বছরে দাঁড়ালো প্রায় ৮০ কোটি টাকা। চট্টগ্রামের কাজীর দেউড়ি মহিলা শাখা থেকে মেসার্স লা এরিস্টোক্রেসি নামে অনুমোদিত ঋণই হয়ে উঠেছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের বড় কেলেঙ্কারি।

দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, নাজমে নওরোজ ২০০৮ সালে লা এরিস্টোক্রেসি নামের একটি রেস্টুরেন্ট চালু করেন এবং ২০১১ সালে ব্যাংকের কাজীর দেউড়ি মহিলা শাখায় একটি হিসাব খোলেন। ওই বছরেই তিনি ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন ও সরঞ্জাম কেনার জন্য ২ কোটি টাকা ঋণের মঞ্জুর হয়। এভাবে ধীরে ধীরে এভাবে সীমা অতিক্রম করে একের পর এক নতুন ‘ডিল’ সৃষ্টি করা হয়েছে। বর্তমানে গ্রাহক নাজমে নওরোজের নামে তৈরি ১৫২টি ডিলের বিপরীতে ৭৯ কোটি ৯৬ লাখ ৬৯ হাজার ৯৮৪ টাকা বকেয়া রয়েছে। অথচ তার অনুমোদিত ঋণসীমা ছিল মাত্র ১.৫০ কোটি টাকা।

মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ৪০৯, ৪২০, ৪৬৮, ৪৭১ ও ১০৯ ধারায়, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২), (৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।