
ভারতের রাজগিরের বিহার স্পোর্টস হকি স্টেডিয়ামে শুক্রবার এশিয়া কাপ হকির সূচনা ম্যাচে শুরুটা ছিল আশার আলোয় ভরা। দ্বিতীয় কোয়ার্টারে আশরাফুল ইসলামের দুর্দান্ত গোল বাংলাদেশের জন্য এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন আঁকিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু র্যাঙ্কিংয়ে অনেকটা এগিয়ে থাকা মালয়েশিয়ার ঝড় সামলাতে শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয় লাল-সবুজের যোদ্ধারা। ম্যাচ শেষে স্কোরলাইন দাঁড়ায়—বাংলাদেশ ১, মালয়েশিয়া ৪।
প্রথম কোয়ার্টারেই বাংলাদেশ শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তোলে। মালয়েশিয়া বেশ কয়েকবার আক্রমণ সাজালেও প্রতিপক্ষের বৃত্তে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি। রক্ষণে অনবদ্য দৃঢ়তা দেখায় বাংলাদেশি খেলোয়াড়রা।
এরপর দ্বিতীয় কোয়ার্টারে আসে ম্যাচের সবচেয়ে আলোড়ন তোলা মুহূর্ত। পেনাল্টি কর্নার থেকে অসাধারণ ফ্লিক শটে গোল করেন আশরাফুল ইসলাম। বাংলাদেশ তখন ১-০ তে এগিয়ে। তবে লিড বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ২৪ মিনিটে মালয়েশিয়ার আশ্রান হামসানি দ্রুত সমতা ফেরান।
তৃতীয় কোয়ার্টারে দুই দলই আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে ব্যস্ত থাকে। ৩৫ মিনিটে পেনাল্টি কর্নার থেকে আখিমুল্লাহ মালয়েশিয়াকে এগিয়ে দেন। বাংলাদেশের রক্ষণ ভাঙতে শুরু করে এ সময় থেকেই।
শেষ কোয়ার্টারে মালয়েশিয়া আরও দুই গোল করে ব্যবধান বাড়ায়। ফলে শুরুতে এগিয়ে থাকলেও শেষ বাঁশি বাজার আগে ১-৪ তে ভেঙে যায় বাংলাদেশের জয়-স্বপ্ন।
মালয়েশিয়ার বিপক্ষে হারটা একেবারেই অপ্রত্যাশিত নয়। র্যাঙ্কিংয়ে তারা বাংলাদেশের চেয়ে ১৭ ধাপ এগিয়ে। আগেও বাংলাদেশের বিপক্ষে তাদের জয়ধারা ভয়ঙ্কর ছিল—২০২২ এশিয়া কাপে বাংলাদেশকে হারিয়েছিল ৮-১ গোলে, আর ২০১৮ এশিয়ান গেমসে ৭-০ ব্যবধানে।
আসলে বাংলাদেশ এশিয়া কাপে খেলতে নামতে চাইছিল না। কিন্তু পাকিস্তান নাম প্রত্যাহার করায় সুযোগ আসে। সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে আগামী বছরের হকি বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে খেলার দরজা খুলে যাবে। বিশ্বকাপটি বসবে বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ডসে।
১৯৮২ সাল থেকে এশিয়া কাপে এখন পর্যন্ত ১১ বার অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ। সর্বোচ্চ অর্জন পঞ্চম স্থান। এবারের গ্রুপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ মালয়েশিয়া (র্যাঙ্কিং ১২), চায়নিজ তাইপে (৩৮) এবং পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ কোরিয়া (১৩)। বাংলাদেশ আছে ২৯ নম্বরে।
আগামী ৩০ আগস্ট দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশে মুখোমুখি হবে চায়নিজ তাইপের, আর ১ সেপ্টেম্বর প্রতিপক্ষ দক্ষিণ কোরিয়া।