
মাত্র ১৫ বছর বয়সে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয়। এরপর মাত্র ছয় বছরের ক্যারিয়ারে ২৫টি ছবি। সাফল্যের শীর্ষে উঠতে উঠতেই নির্মম পরিণতি- ২১ বছর বয়সে এক সড়ক দুর্ঘটনায় শেষ হয়ে যায় এক অনন্য প্রতিভার জীবন। তিনি মালায়ালম চলচ্চিত্রের আলো ছড়ানো অভিনেত্রী মনীষা উন্নি।
নৃত্যশিল্পী মা-বাবার সংসারে জন্ম
১৯৭১ সালে জন্ম মনীষার। বাবা ব্যবসায়ী নারায়ণ উন্নি, মা শ্রীদেবী উন্নি ছিলেন প্রখ্যাত মোহিনীয়াট্টম নৃত্যশিল্পী ও অভিনেত্রী। নাচের প্রতি টান থেকেই অভিনয় জগতে প্রবেশ করেন তিনি। পড়াশোনা করেছেন বেঙ্গালুরুর সেন্ট চার্লস হাইস্কুল ও বিশপ কটন গার্লস স্কুলে। পরে মনোবিজ্ঞান নিয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন মাউন্ট কারমেল কলেজ থেকে।
জাতীয় পুরস্কার জয়ী সবচেয়ে কমবয়সী নায়িকা

পরিবারের ঘনিষ্ঠজন, লেখক এম. টি. বাসুদেবন নায়ারের হাত ধরেই সিনেমায় প্রবেশ। ১৯৮৬ সালে তাঁর লেখা ও হরিহরণ পরিচালিত ‘নক্ষত্রাঙ্গল’ ছবিতে অভিষেকেই সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন মনীষা। মাত্র ১৫ বছর বয়সে, ১৯৮৭ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন সেরা অভিনেত্রীর জন্য, যা আজও বিরল একটি কৃতিত্ব।
স্বল্প সময়ে উজ্জ্বল ক্যারিয়ার
পরবর্তী ছয় বছরে একে একে ২৫টি সিনেমায় অভিনয় করে দক্ষিণী চলচ্চিত্রে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করেন তিনি। কাজ করেছেন সেই সময়কার জনপ্রিয় পরিচালক শিবি, হরিহরণ, প্রিয়দর্শন, অজয়ন ও কামালের মতো তারকাদের সঙ্গে। মালায়ালম ছাড়াও তামিল চলচ্চিত্রেও সফল ছিলেন মনীষা।
১৯৮৭ সালে ‘পূক্কাল ভিডুম থুধু’ দিয়ে তামিলে অভিষেক। এরপর ১৯৮৯ সালে ‘দ্রাবিড়ান’ ছবিতে সত্যরাজের বিপরীতে অভিনয় করে নজর কাড়েন। ১৯৯২ সালে গুরু ধনাপালের ‘উন্নাই নেনাচেন পাট্টু পাডিচেন’ বক্স অফিসে সাড়া ফেলে দেয়।

পর্দার মৃত্যু-বাস্তবের ট্র্যাজেডি
১৯৯২ সালে মালায়ালম ছবি ‘চেপ্পাদিভিদ্যা’র শুটিং চলাকালীন মা-কে নিয়ে কেরালার এক সড়কে যাত্রা করছিলেন মনীষা। তাঁদের গাড়ির সঙ্গে একটি কেএসআরটিসি বাসের সংঘর্ষ হয়। পিছনের সিটে ঘুমিয়ে থাকা মনীষাকে হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত ঘোষণা করা হয়। বয়স তখন মাত্র ২১।
ভয়াবহ কাকতালীয় ঘটনা হলো, মৃত্যুর অল্প কিছুদিন আগে মুক্তি পাওয়া তাঁর তামিল ছবি ‘উন্নাই নেনাচেন পাট্টু পাডিচেন’ এও তাঁর চরিত্রের মৃত্যু দেখানো হয়েছিল। বাস্তবের ট্র্যাজেডি যেন পর্দার গল্পকেই প্রতিফলিত করেছিল।
তাঁর মৃত্যুর পর আরেক তামিল ছবি ‘মূন্দ্রাভধু কান্ন’, যা পরিচালনা করেছিলেন মানিভান্নান, মুক্তি পায়। সেটিই ছিল তাঁর শেষ অভিনীত ছবি।
সূত্র: ডিএনএ ইন্ডিয়া