
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনকে ঘিরে কারচুপি বা ‘ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং’-এর আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, “আমরা পূর্ণ স্বচ্ছতার সঙ্গে নির্বাচন সম্পন্ন করেছি। পোলিং এজেন্ট, সাংবাদিক, সিসিটিভি ক্যামেরা, সর্বোচ্চসংখ্যক বুথ- সবই উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। ভোট গণনার সময়ও সাংবাদিকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়েছে। বাইরে মনিটরের ডিসপ্লেতে সবাই স্পষ্টভাবে দেখতে পাচ্ছেন। এ পরিস্থিতিতে কারচুপির কোনো আশঙ্কা আমি দেখি না।”
গতকাল মঙ্গলবার ডাকসু নির্বাচন শেষে সিনেট ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
উপাচার্য জানান, স্মরণকালের মধ্যে সর্বাধিকসংখ্যক শিক্ষার্থী উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিয়েছেন। দু–একটি ছোট অভিযোগ ছাড়া বড় কোনো অনিয়মের অভিযোগ আসেনি। যে অভিযোগগুলো এসেছে, নির্বাচন কমিশন সেগুলো গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করছে।
তিনি বলেন, “ডাকসু আমাদের ছাত্রদের প্রাণের দাবি। এটি গণ–অভ্যুত্থানের মূল মূল্যবোধের স্মারক। শিক্ষার্থীদের প্রতি সম্মান জানিয়ে আমরা এই বিশাল চ্যালেঞ্জ নিয়েছি। ১১ মাস ধরে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিটি প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। শিক্ষার্থীদের ব্যাপক সাড়া ইতিহাসে এই প্রথম।”
নির্বাচন ঘিরে নাশকতার কোনো তথ্য ছিল না দাবি করে উপাচার্য বলেন, সকাল থেকে কোনো রাজনৈতিক দল বা বাহ্যিক জনসমাগম দেখা যায়নি। তারপরও পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আটটি প্রবেশপথ, প্রোক্টরিয়াল টিম, শিক্ষক, পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছিল।
তিনি আরও জানান, বিকেল চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের বাইরে কিছু লোকসমাগমের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ডিএমপি কমিশনার ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। একইসঙ্গে গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ শুরু হয়।
ছাত্রদলের অভিযোগ প্রসঙ্গে ভিসি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো রাজনৈতিক দলের প্রভাবিত নয়। জামায়াতে ইসলামী বা অন্য কোনো দলের সঙ্গে আমার কখনোই সম্পৃক্ততা ছিল না। এ অভিযোগ সম্পূর্ণ পারসেপশনের বিষয়।”
তিনি আরও যোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয় একসময় স্থবির হয়ে পড়েছিল। হলগুলো ভাসমান অবস্থায় ছিল, একাডেমিক কার্যক্রম ও গবেষণা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সেই সংকট কাটিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।