
কেমব্রিজে পরিকল্পিত ২০০ মিলিয়ন পাউন্ড বা প্রায় ৩ হাজার ২৯৯ কোটি বাংলাদেশি টাকার গবেষণা কেন্দ্র সম্প্রসারণ প্রকল্প স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্যের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকা। এর ফলে বহুল আলোচিত ৬৫০ মিলিয়ন পাউন্ড বা ১০ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা বিনিয়োগ পরিকল্পনার কোনো অংশই বর্তমানে কার্যকর হচ্ছে না। (প্রতি পাউন্ডের রেট ১৬৪ টাকা ৯৯ পয়সা ধরে)
গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) অ্যাস্ট্রাজেনেকার দেয়া এক বিবৃতির বতার দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি জানায়, “আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ প্রয়োজনীয়তা নিয়মিতভাবে মূল্যায়ন করি। কেমব্রিজে সম্প্রসারণ প্রকল্প আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।”
স্থগিত হওয়া এই প্রকল্পটি চালু হলে প্রায় ১,০০০ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হওয়ার কথা ছিল। এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রতিষ্ঠানটি মেরসিসাইডে তাদের ভ্যাকসিন উৎপাদন কারখানায় ৪৫০ মিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগ পরিকল্পনাও বাতিল করে দেয়।
যুক্তরাজ্যে বিনিয়োগ স্থগিতের বিপরীতে, অ্যাস্ট্রাজেনেকা চলতি বছরের জুলাই মাসে ঘোষণা করে ২০৩০ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৩৭ বিলিয়ন পাউন্ড) বিনিয়োগ করবে। এর আওতায় ভার্জিনিয়ায় নতুন ওষুধ উৎপাদন কারখানা নির্মাণসহ মেরিল্যান্ড, ম্যাসাচুসেটস, ক্যালিফোর্নিয়া, ইন্ডিয়ানা ও টেক্সাসে গবেষণা ল্যাব ও সেল থেরাপি সুবিধা সম্প্রসারণ করা হবে।
এই সপ্তাহে যুক্তরাজ্যের ফার্মাসিউটিক্যাল খাত একের পর এক নেতিবাচক ঘোষণার মুখে পড়ে।
মার্কিন প্রতিষ্ঠান মার্ক (ইউরোপে এমএসডি) ১ বিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের লন্ডন গবেষণা কেন্দ্র বাতিল করেছে এবং ১২৫ বিজ্ঞানীকে ছাঁটাই করেছে।
ইলাই লিলি লন্ডনে তাদের ২৭৯ মিলিয় পাউন্ড ন বিনিয়োগের ‘গেটওয়ে ল্যাব’ প্রকল্প স্থগিত করেছে।
ফরাসি প্রতিষ্ঠান সনোফি ঘোষণা দিয়েছে, সুনির্দিষ্ট সরকারি পরিকল্পনা না আসা পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে বড় ধরনের বিনিয়োগ আপাতত বন্ধ থাকবে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও খ্যাতনামা বিজ্ঞানী স্যার জন বেল সতর্ক করে বলেন, বড় ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো যুক্তরাজ্যে আর বিনিয়োগ করবে না।
কিয়ার স্টারমারের সরকার লাইফ সায়েন্স খাতকে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতির “মূল রত্ন” হিসেবে আখ্যায়িত করলেও, বিনিয়োগ হ্রাস উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। ওষুধ উৎপাদকরা দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে যে, যুক্তরাজ্যে নতুন ওষুধের জন্য এনএইচএসের ব্যয় অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম।
এনএইচএস-এর মূল্য নির্ধারণে ‘ক্লব্যাক রেট’ হলো বাজারে আলোচিত আরেকটি বিষয়। বর্তমানে প্রায় ২৩% পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানগুলিকে আয় ফেরত দিতে হয়। শিল্প সংগঠনগুলো দাবি করছে এটি একক অঙ্কে নামিয়ে আনা হোক, যেমনটি ইউরোপের অন্যান্য দেশে প্রচলিত।

























