রবিবার । ডিসেম্বর ৭, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক বিজনেস ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৮:৪৮ অপরাহ্ন
শেয়ার

নিলামে আরও ৩৫ কোটি ডলার কিনলো বাংলাদেশ ব্যাংক


reserve
অর্থ পাচার রোধে সরকারের কঠোর পদক্ষেপের ফলে প্রবাসী আয় ও রপ্তানি আয় দুটোই বেড়েছে। এতে বাজারে ডলারের সরবরাহ বাড়লেও দাম কমেনি, বরং বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপে স্থিতিশীল রাখা হচ্ছে।

আজ সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২৬টি বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে মোট ৩৫ কোটি ৩০ লাখ ডলার কিনেছে। নিলামে প্রতি ডলার কেনা হয়েছে ১২১ টাকা ৭৫ পয়সায়। এতে চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংকের মোট ডলার কেনার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৭৪ কোটি ৭৫ লাখ ডলার। এর ফলে একদিকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ছে, অন্যদিকে বাজারে ডলারের দামও ১২০ টাকার ওপরে থাকছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, প্রতিদিনই বাংলাদেশের প্রধান বাণিজ্য অংশীদার দেশগুলোর মুদ্রার গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি বাজারে ডলারের সরবরাহ ও চাহিদা নিবিড়ভাবে নজরদারি করা হচ্ছে। এজন্য প্রতিদিন সকালে ডলারের রেফারেন্স রেট প্রকাশ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দাম ঘোষিত রেফারেন্সের নিচে নামলে নিলামের মাধ্যমে ব্যাংকগুলো থেকে ডলার কেনা হচ্ছে।

আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী ডলারের দাম এখন পুরোপুরি বাজারনির্ভর। জুলাই থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিলামের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংকের অতিরিক্ত ডলার কিনছে। বর্তমানে আইএমএফের নির্ধারিত মানদণ্ডের চেয়ে বেশি রিজার্ভ রয়েছে বাংলাদেশের।

২০১২ সাল পর্যন্ত স্থিতিশীল থাকা ডলারের দাম ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে হঠাৎ বেড়ে যায়। ৮৫ টাকা থেকে এক লাফে ১২২ টাকায় পৌঁছায় প্রতি ডলার। এতে মুদ্রাস্ফীতি বাড়ে, মানুষের জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়ে। তখন বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে টানা ২৫ বিলিয়নের বেশি ডলার বিক্রি করলেও দাম নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের আগস্টে রিজার্ভ সংকটে সরকারি আমদানির জন্য ডলার সহায়তা বন্ধ করে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে এ বছরের মার্চ থেকে রিজার্ভ বাড়তে শুরু করলে পুনরায় বাজার থেকে ডলার কেনা শুরু হয়।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, প্রবাসী আয় ডলার-সংকট মোকাবিলায় সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসী আয় এসেছে ৩০ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার— যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ২৭ শতাংশ বেশি। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) প্রবাসী আয় বেড়েছে আরও ১৮ দশমিক ৪১ শতাংশ। অন্যদিকে, রপ্তানি আয়েও ৭ দশমিক ৭২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

সব মিলিয়ে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে, রিজার্ভও শক্তিশালী হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কৌশলগত ডলার কেনার ফলে দাম এখনও ১২০ টাকার ওপরে স্থিতিশীল রয়েছে।