
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। বুধবার ট্রাইব্যুনাল-১ এ বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে তিনি ৪৭তম সাক্ষী হিসেবে আংশিক জবানবন্দি দেন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার তার অবশিষ্ট জবানবন্দি গ্রহণ করা হবে।
জবানবন্দিতে নাহিদ ইসলাম বলেন, গত বছরের ১৪ জুলাই শেখ হাসিনা আন্দোলনরত ছাত্রদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ ও ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ আখ্যা দিয়ে বক্তব্য দেন, যা ছাত্রসমাজকে অপমানিত করে এবং প্রতিবাদে রাজপথে নামতে বাধ্য করে। এরপর একের পর এক দমনপীড়ন, মামলা ও ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়ার মতো পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
তিনি আরও জানান, ১৯ জুলাই আন্দোলনরত ছাত্র–জনতার ওপর পুলিশ ও সরকারি বাহিনীর নির্বিচার গুলি চালানো হলেও কোনো ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় খবর প্রচার হয়নি। এতে স্পষ্ট হয় যে সরকার গণমাধ্যমকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিল।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ১৭ জুলাই রাতে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হলে ১৮ জুলাই দেশব্যাপী ছাত্র-জনতা রাজপথে নামে। বিশেষত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদরাসার শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখে। এ সময় ব্যাপক দমনপীড়ন, গ্রেপ্তার ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য শেষে সাংবাদিকদের নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই হত্যাযজ্ঞে জড়িত সব বাহিনীর সদস্যকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। কোনো অপরাধী যেন রেহাই না পায়, সে দাবি করেন তিনি।
অন্যদিকে শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন দাবি করেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কোনো হত্যাকাণ্ড বা দুর্নীতি হয়নি। তিনি বলেন, মাহমুদুর রহমানের জবানবন্দিতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তার কোনো ভিত্তি নেই।
তার মতে, শেখ হাসিনা কিংবা আসাদুজ্জামান খান কেউই কোনো হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ দেননি। তাই এ মামলায় ‘কমান্ড রেসপনসিবিলিটি’র প্রসঙ্গও অবান্তর। তিনি আরও দাবি করেন, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে কোনো হত্যাকাণ্ড ঘটেনি এবং গত ১৬ বছরে বাংলাদেশে কোনো ফ্যাসিবাদের উত্থান হয়নি।