
বছরজুড়ে যেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু জয়া আহসান। একের পর এক ভিন্ন ঘরানার চলচ্চিত্রে মুগ্ধ করেছেন দুই বাংলার দর্শক। ‘তাণ্ডব’, ‘উৎসব’, ‘ডিয়ার মা’ থেকে শুরু করে ‘পুতুল নাচের ইতিকথা’- প্রতিটি ছবিতেই নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করিয়েছেন তিনি। এবার হাজির হচ্ছেন একেবারেই ভিন্ন স্বাদের সিনেমা ‘ফেরেশতে’ নিয়ে।
আগামীকাল মুক্তি পাচ্ছে বাংলাদেশ-ইরানের যৌথ প্রযোজনার এ সিনেমা। প্রান্তিক মানুষের জীবনের গল্প নিয়ে ছবিটি নির্মাণ করেছেন ইরানি পরিচালক মুর্তজা অতাশ জমজম। জয়ার কাছে এটি শুধু একটি চরিত্র নয়, বরং এক ধরনের আত্মঅন্বেষণের অভিজ্ঞতা।
জয়া বলেন, “প্রান্তিক মানুষের জীবন যখন ক্যামেরায় ধরা হয়, তখন তা আর কেবল সিনেমা থাকে না, হয়ে ওঠে একটা দায়বদ্ধতা। আমি চেষ্টা করেছি সেই দায়টুকু বহন করতে।”
বাংলাদেশ ও ভারতের চলচ্চিত্রে নিয়মিত অভিনয় করলেও এবারই প্রথমবার ইরানি ভাষার ছবিতে কাজ করলেন জয়া। ভাষা ও সংস্কৃতির ব্যবধান সত্ত্বেও শুটিং সেটে পরিচালক ও টিমের সঙ্গে তৈরি হয়েছিল এক ভিন্ন সেতুবন্ধন। তাঁর ভাষায়, “চলচ্চিত্র আসলে ভাষাহীন এক শিল্প, যা সরাসরি হৃদয়ের কথা বলে। শব্দ নয়, দৃষ্টি আর নীরবতাই হয়ে ওঠে সবচেয়ে বড় সংলাপ।”

এই সিনেমায় অভিনয়ের পাশাপাশি সহপ্রযোজকের দায়িত্বও পালন করেছেন জয়া। প্রযোজনার অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সহপ্রযোজক মানে শুধু অর্থনৈতিক ভূমিকা নয়, গল্পের ভেতর ডুবে থাকা, প্রতিটি সিদ্ধান্তে নিজের হৃদয়ের ছাপ রাখা ‘ফেরেশতে’-তে সেটা করতে পেরেছি বলেই মনে হচ্ছে।”
চরিত্র প্রসঙ্গে খুব বেশি কিছু জানাতে চাননি তিনি। দর্শকের কৌতূহল অটুট রাখতেই নীরবতা বজায় রেখেছেন। তবে ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, ছবিতে তিনি এমন একজন প্রান্তিক ও সংগ্রামী মানুষের চরিত্রে অভিনয় করেছেন, যাদের জীবন সাধারণত আড়ালে থেকে যায়।
এদিকে সিনেমার মুক্তির আগেই জয়ার হাতে ধরা দিয়েছে আরেকটি সম্মান। তৃতীয়বারের মতো জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) শুভেচ্ছাদূত নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। দায়িত্ব এবার আরও বড়-দারিদ্র্য হ্রাস, জেন্ডার সমতা আর জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় কাজ করা।

ক্যারিয়ার ও সাফল্য প্রসঙ্গে জয়া আহসান বলেন, “ছিটেফোঁটা কোনো অর্জন যদি আমার থাকে, তার কারণ আমি স্বাধীন দেশের নাগরিক। শিল্পে সফলতা বলে কিছু নেই, আছে অবিরাম পথচলা।”
বাংলাদেশ থেকে কলকাতা, এবার ইরান- আরও একবার প্রমাণ করলেন, জয়া আহসান সীমাবদ্ধতায় আটকে থাকেন না। প্রতিটি চরিত্রেই তিনি নিজেকে নতুন করে ভাঙেন, আবার গড়েন- আর এভাবেই বারবার দর্শককে উপহার দেন এক নতুন জয়া।


























