শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটায় ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাত ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদারের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
এতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরাজমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধাভিত্তিক ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। একইসঙ্গে রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) জরুরি সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করা হয়েছে।
এর আগে, পোষ্য কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেন। বৃহস্পতিবার রাত থেকে ৭-৮ জন শিক্ষার্থী আমরণ অনশনে বসেন। এতে অসুস্থ হয়ে পড়েন দুজন।
প্রশাসনের নির্বিকার মনোভাবের প্রতিবাদে সেদিন বিকেলে আন্দোলনকারীরা উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল ইসলাম মাসউদ, প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান ও জনসংযোগ প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদারসহ কয়েকজন শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এসময় তাদের সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে।
ঘটনাক্রমে উপ-উপাচার্য জুবেরী ভবনের দ্বিতীয় তলায় আশ্রয় নিলে শিক্ষার্থীরা সেখানেও তাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে সেখানে কয়েকজন শিক্ষক উপস্থিত হন। সাধারণ শিক্ষার্থীরাও জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে কিছু শিক্ষার্থী দোতলায় উঠে কয়েকটি কক্ষের জানালা ভাঙচুর করেন।
এ ঘটনায় উপ-উপাচার্য, একজন উপ-রেজিস্ট্রার, রাবি ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আল শাহরিয়ার শুভ ও সাবেক সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মারসহ ৭-৮ জন আহত হন।
রাত ১০টার দিকে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল আলীম ঘোষণা দেন যে, রবিবার শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করবেন। ওই ঘোষণার পর আন্দোলন আরও বেগবান হয়। মধ্যরাতে ১৭টি হল থেকে শিক্ষার্থীরা বের হয়ে প্যারিস রোডে অবস্থান নেন। এসময় শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের প্রধান ফটক ভাঙার চেষ্টা করেন।
তাদের আন্দোলনের মুখে অবশেষে রাত ১টার দিকে প্রশাসন থেকে পোষ্য কোটায় ভর্তি কার্যক্রম স্থগিতের ঘোষণা আসে।