
ইলিয়াস মিয়া
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার সুজাপুর গ্রামের ইলিয়াস মিয়া (৫৪) জীবনের দীর্ঘ দুই দশকেরও বেশি সময় কাটিয়েছেন বিদেশের মাটিতে। পরিবারকে স্বচ্ছল করতে ২০০৪ সালে পাড়ি জমিয়েছিলেন কুয়েতে। অভাবের সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে দিন-রাত পরিশ্রম করেছেন তিনি। অবশেষে দেশে ফিরে স্থায়ী হওয়ার স্বপ্ন দেখছিলেন এই প্রবাসী। কিন্তু সেই স্বপ্ন অপূর্ণ রেখেই লাশ হয়ে ফিরতে হলো তাঁকে।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে ইলিয়াস মিয়ার মরদেহ পৌঁছায় নিজ বাড়ি নড়াইলের সুজাপুর গ্রামে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর প্রিয়জনকে প্রাণহীন অবস্থায় ফিরে পেয়ে শোকে স্তব্ধ হয়ে যান স্বজনরা। তাঁকে একনজর দেখতে ভিড় করেন গ্রামের মানুষ। পরে বিকেলে জানাজা শেষে নিজ গ্রামে দাফন করা হয় তাঁকে।
পরিবারের সদস্যরা জানান, চলতি মাসের শেষ দিকে স্থায়ীভাবে দেশে ফেরার পরিকল্পনা করেছিলেন ইলিয়াস। আর কোনোদিন বিদেশে না গিয়ে প্রিয়জনদের সঙ্গেই বাকিটা জীবন কাটানোর ইচ্ছা ছিল তাঁর। ১০ সেপ্টেম্বর এক কাজে কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাসে গিয়েছিলেন তিনি। ফেরার পথে রাস্তা পার হওয়ার সময় গাড়িচাপায় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান এই প্রবাসী।
ইলিয়াসের স্বজন খান মেজবাহ উদ্দিন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ইলিয়াস প্রায় ২১ বছর কুয়েতে ছিলেন। এই মাসের শেষের দিকে স্থায়ীভাবে দেশে আসার কথা ছিল। কিন্তু দেশে ফিরেছে তাঁর মরদেহ। আমরা সবাই ভেঙে পড়েছি।
ইলিয়াসের মতো হাজারো প্রবাসী কর্মজীবনের বেশিরভাগ সময় কাটান পরবাসে। পরিবারকে সুখী করার স্বপ্নে দেশের বাইরে ঘাম ঝরান তারা। কিন্তু জীবনের শেষ সময়ে অনেকেই প্রিয়জনের কাছে স্বাভাবিকভাবে ফিরতে পারেন না। ইলিয়াস মিয়ার অকাল মৃত্যু সেই কষ্টের গল্পই মনে করিয়ে দেয়।