বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন বিনিয়োগকারী ও স্ন্যাপচ্যাটের সাবেক প্রধান কৌশলগত কর্মকর্তা (সিএসও) ইমরান খান নিউইয়র্কে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে তিনি বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেন।
ইমরান খান জানান, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তিনি দেশের অর্থনৈতিক ও বিনিয়োগ পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। তার মতে, বর্তমানে নিয়ন্ত্রক পরিবেশ আগের তুলনায় অনেক বেশি অনুকূল, বিশেষ করে ফিনটেক খাতের দ্রুত বিকাশ ভবিষ্যতের জন্য বড় সম্ভাবনা তৈরি করেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি ফ্রন্টিয়ার মার্কেট। এখানে তরুণ জনগোষ্ঠী বিশাল, আর ফিনটেক খাতে প্রবৃদ্ধির সুযোগ সীমাহীন।
অধ্যাপক ইউনূস আলোচনায় ইমরান খানকে দেশে ফিনটেক, স্বাস্থ্যসেবা এবং সামাজিক ব্যবসা খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। জবাবে ইমরান খান বলেন, দারিদ্র্য দূরীকরণে ইউনূসের আজীবন কাজ তাঁকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করেছে এবং এখন মাতৃভূমিতে অবদান রাখার সঠিক সময়। তিনি আরও বলেন, আমি আপনার কাজের একজন বড় ভক্ত। আপনি আমাদের জাতীয় গর্ব।
ইমরান খানের ক্যারিয়ার শুরু জেপি মরগান ও ক্রেডিট সুইসে বিনিয়োগ ব্যাংকার হিসেবে। পরবর্তীতে আলিবাবার রেকর্ড ভাঙা আইপিওতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পান। এরপর স্ন্যাপচ্যাটের সিএসও হিসেবে কয়েক মাসের মধ্যেই কোম্পানির বাজারমূল্য দ্রুত বাড়াতে সক্ষম হন। বর্তমানে তিনি আলেফ হোল্ডিং-এর বোর্ড চেয়ারম্যান এবং প্রাইম অ্যাসেট নামের একটি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা, যা মূলত প্রযুক্তি-নির্ভর রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাওয়া খাতে বিনিয়োগ করে।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রস্তাব দেন, তাদের মোট বিনিয়োগের অন্তত এক শতাংশ সামাজিক ব্যবসায় ব্যয় করার অথবা একটি যৌথ সামাজিক ব্যবসা তহবিল গঠনের। ইমরান খান প্রস্তাবটিকে স্বাগত জানিয়ে ভবিষ্যতে সম্পৃক্ত হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
অধ্যাপক ইউনূস এ সময় ইমরান খানকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। জবাবে তিনি সহসাই সফরের পরিকল্পনার কথা জানান। ইউনূস বলেন, দেশের তরুণদের জন্য আপনার মতো রোল মডেল প্রয়োজন। বর্তমানে দেশে উদ্দীপনামূলক সময় চলছে—আপনি নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করতে পারেন।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদও উপস্থিত ছিলেন।
