
ইসরায়েলি বর্বরতায় মাটিতে মিশে যাওয়া গাজা উপত্যকা
ইসরায়েলের বিধ্বংসী গাজা যুদ্ধে সৃষ্ট পরিণতি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। ধ্বংসস্তূপ অপসারণ, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন ও গাজা পুনর্গঠনকে অগ্রাধিকার দিয়ে দ্রুত আন্তর্জাতিক সহায়তা আহ্বান করা হবে বলে জানিয়েছেন প্যালেস্টাইন লিবারেশন অরগানাইজেশনের (পিএলও) নির্বাহী কমিটি। আনাদোলুর বরাত দিয়ে এই খবর পরিবেশন করেছে মিডল ইস্ট মনিটার।
রামাল্লায় এক বৈঠকের পর প্রদত্ত বিবৃতিতে নির্বাহী কমিটি জানিয়েছে, “বিধ্বংসী যুদ্ধের পরিণতি মোকাবেলার জন্য প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে- যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করা, ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দেওয়া এবং মিসরের সহযোগিতায় গাজা পুনর্গঠনবিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন দ্রুত আয়োজন করা।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, মিসরের আহ্বানে সব ফিলিস্তিনি দল ও গোষ্ঠীকে নিয়ে জাতীয় সংলাপ শুরুর উদ্যোগকে তারা স্বাগত জানিয়েছে। বিবৃতিতে এই উদ্যোগকে ‘দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ঐক্য জোরদারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ হিসেবে আখ্যায়িত করে এটিকে দুই-রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়নের পথে অগ্রগতির সুযোগ হিসেবে মূল্যায়ন করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার মিসরের লোহিত সাগর উপকূলীয় শহর শারম আল-শেখে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের দুই বছরের যুদ্ধের অবসান ঘটাতে এক যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঘোষণা করা হয়। পিএলও’র নির্বাহী কমিটি এ ঘটনায় ইতিবাচক মূল্যায়ন প্রকাশ করেছে এবং আন্তর্জাতিক সম্পৃক্ততা বৃদ্ধিকে পুনর্গঠন কার্যক্রমের সফলতার জন্য অপরিহার্য বলে দেখেছে।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, উপযুক্ত সীমায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আরব ও ইসলামী দেশগুলোর অর্থায়নও আকর্ষণীয় ভূমিকা রাখতে পারে- যা পুনর্গঠন ও পুনর্বাসনের চলমান কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করবে।
তথ্যসূত্রে বলা হয়েছে, গত ২৯ সেপ্টেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা বিষয়ে ২০ ধাপের এক পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। ওই পরিকল্পনায় রয়েছে- সব ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার বিনিময়ে প্রায় ২,০০০ ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তি, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, ধাপে ধাপে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার ও পরবর্তী প্রশাসনিক রূপায়ণের ধাপসমূহ। পরিকল্পনার পরবর্তী ধাপ হিসেবে হামাসকে ব্যতীত করে গাজায় নতুন প্রশাসনিক কাঠামো গঠন, নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠাসহ হামাসের নিরস্ত্রীকরণ ও আরব-ইসলামী দেশগুলোর অংশগ্রহণে পুনর্গঠনের জন্য অর্থায়ন প্রস্তাব করা হয়েছিল।
আরব ও মুসলিম দেশগুলো ঘোষণা করা পরিকল্পনাটিকে স্বাগত জানিয়েছে। দেশগুলো বলছে, পরিকল্পনার বেশ কিছু বিষয় বাস্তবায়নের আগে আরও ব্যাপক আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে এবং তা নিয়ে সমন্বয় জরুরি। পিএলও নির্বাহী কমিটি বলেছে, আন্তর্জাতিক সম্মেলন ও সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে গাজা পুনর্গঠন ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের দ্রুত পুনর্বাসন নিশ্চিত করা তাদের অগ্রাধিকার থাকবে।




























