
দুই বছরের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পর অবশেষে গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। শুক্রবার স্থানীয় সময় সকালে ইসরায়েলি সেনারা বিভিন্ন এলাকা থেকে ধীরে ধীরে সৈন্য প্রত্যাহার শুরু করে। যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পরপরই আশ্রয়কেন্দ্র ও সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে হাজারো বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি নিজ ঘরে ফেরার যাত্রা শুরু করেছেন।
দীর্ঘদিনের সংঘাত ও ধ্বংসযজ্ঞের পর গাজা জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে স্বস্তি ও আবেগ। পরিবার-পরিজন হারানো বহু মানুষ চোখের জল ফেলতে ফেলতে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া নিজেদের বাড়ির পথে পা বাড়িয়েছেন।
যুদ্ধবিরতির পর উল্লাস ও শঙ্কা একসঙ্গে
দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস এলাকা থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, যুদ্ধবিরতির ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে গাজা সিটির দিকে রওনা হয়। অনেকে দলবেঁধে হাঁটছেন, কেউ ট্রাকে বা গাড়িতে চড়ছেন। কেউ উল্লাসে ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনি দিচ্ছেন, কেউ শিস বাজিয়ে আনন্দ প্রকাশ করছেন।
তবে আনন্দের মধ্যেও রয়ে গেছে শঙ্কা। গাজা সিটির বাসিন্দা ৪০ বছর বয়সী ইব্রাহিম আল-হেলু বলেন, “আমরা খুশি, কিন্তু সতর্কও। পরিস্থিতি এখনো পুরোপুরি নিরাপদ নয়। কয়েক ঘণ্টা আগে পর্যন্ত গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছিল, তাই কিছুটা সময় অপেক্ষা করে তারপর রওনা দিয়েছি।”
ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার ও বন্দি ফেরত প্রত্যাশা
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী নিশ্চিত করেছে, তারা ধীরে ধীরে গাজা উপত্যকার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহার করছে। একই সঙ্গে ইসরায়েলি পরিবারগুলো এখনো অপেক্ষা করছে গত ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হাতে অপহৃতদের ফিরে পাওয়ার আশায়।
গাজার মানবিক পরিস্থিতি
দীর্ঘ সংঘাতে গাজার অবকাঠামো প্রায় পুরোপুরি বিধ্বস্ত। জাতিসংঘের তথ্যমতে, উপত্যকার প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছে, খাদ্য ও পানির তীব্র সংকট চলছে। যুদ্ধবিরতির ফলে মানবিক ত্রাণ কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার আশা করছে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো।
বিশ্লেষকদের মতে, এই যুদ্ধবিরতি যদি টেকসই হয়, তাহলে তা মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি প্রশমনে বড় ভূমিকা রাখবে এবং গাজার পুনর্গঠনের পথ খুলে দেবে।




























