
কটিয়াদী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাবিবুল্লাহ খান
‘পুলিশ হয়ে গেছে এখন বানরের মতো। রিকশাওয়ালার মার খায় পুলিশ। বানরের খাঁচায় বন্দি করে নাচাচ্ছে আমাদের।’ নিজের পেশা নিয়ে এমন ক্ষোভের প্রকাশ করেছেন কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাবিবুল্লাহ খান।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) রাতে থানায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে উত্তেজিত হয়ে এমন মন্তব্য করেন তিনি। ঘটনাটির একটি ভিডিও ইতোমধ্যে স্থানীয় সাংবাদিকদের হাতে এসেছে।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার কটিয়াদী মডেল থানায় এক পিকনিকের আয়োজন করা হয়। খাবার খাওয়ার পর পরিদর্শক হাবিবুল্লাহ খানসহ অন্তত ১০ জন পুলিশ সদস্য অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের মধ্যে ছয়জন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র নেন।
এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের পর বৃহস্পতিবার রাতে কয়েকজন সাংবাদিক থানায় গিয়ে হাবিবুল্লাহ খানের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন। তখনই তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,
‘আমি অসুস্থ ছিলাম কখন? যিনি রিপোর্ট করেছেন, তাকে গিয়ে জিজ্ঞেস করুন। থানায় যদি পিকনিক হয়, সেটা কি নিউজ করার বিষয়?’
সাংবাদিকরা যুক্তি দেন, থানার কয়েকজন সদস্য অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, তাই বিষয়টি সংবাদযোগ্য। জবাবে পরিদর্শক বলেন, ‘ধরে নিন আমরা থানায় পিকনিক করেছি। এতে কারও কাছ থেকে চাঁদাবাজি করেছি? নিজের টাকায় খাওয়ার অধিকার তো আছে!’
এরপর সাংবাদিকরা বিদায় নিতে উদ্যত হলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘পুলিশ হয়ে গেছে এখন বানরের মতো। রিকশাওয়ালার মার খায় পুলিশ। বানরের খাঁচায় বন্দি করে নাচাচ্ছে আমাদের। আমি অন্য চাকরির চিন্তা করছি।’
সাংবাদিকরা এমন মন্তব্যে আপত্তি জানালে তিনি বলেন, ‘বানর হয়ে গেছি তো এখন, তাই বললাম।’ তবে পরে এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাবিবুল্লাহ খান সাংবাদিকদের সঙ্গে এমন কোনো মন্তব্য করার বিষয়টি অস্বীকার করেন।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী বলেন, ‘এভাবে কথা বলা সমীচীন নয়। বিপক্ষে সংবাদ প্রকাশ হলেই কোনো পুলিশ কর্মকর্তা সাংবাদিকদের প্রতি ক্ষুব্ধ হতে পারেন না, বরং তাকে সংশোধন হতে হবে। বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখছি। তবে চাকরি করবেন কি করবেন না, সেটা তার ব্যক্তিগত বিষয়।’