
চট্টগ্রাম নগরের জিইসি কনভেনশন সেন্টারে কনসার্টে ‘জয় বাংলা’ ও ‘শেখ হাসিনা’ স্লোগানকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ১০ জনকে আসামি করে মামলা করেছে খুলশী থানা পুলিশ। গ্রেপ্তার আসামিদের রোববার আদালতে হাজির করা হলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তাদের কারাগারে পাঠান।
আসামিরা হলেন— আয়মান মুরাদ ফারদিন, নাজমুল হোসাইন, সালমান আহমেদ অভিন, আলেক খন্দকার, জাকির হোসেন, নুর ই আলম সিদ্দিকী, শহিদুল ইসলাম সানি, সাব্বির হোসেন, তাসলিমুল ইসলাম ইফাজ ও নুর এলাহি ফারুক। এদের মধ্যে নাজমুল ও সালমান আয়োজক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা।
এই ঘটনার পর খুলশী থানায় সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে সমাবেশ করেছে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে)। এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ জানান, সাংবাদিকের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “যদি আমার কোনো কর্মকর্তা অন্যায় কিছু করে থাকে, তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
খুলশী থানার ওসি শাহীনুর জামান জানান, মোটরসাইকেল প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠানের কোনো অনুমতি ছিল না। কনসার্টে মারামারির ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।
শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে কনভেনশন সেন্টারে একটি মোটরসাইকেল প্রতিষ্ঠানের আয়োজনে টেস্ট রাইড ও ফ্রি সার্ভিস ক্যাম্পেইনের পর ব্যান্ড দল আর্টসেলের কনসার্ট অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানটি সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল। একপর্যায়ে কয়েকজন তরুণ ‘জয় বাংলা’ ও ‘শেখ হাসিনা’ স্লোগান দিলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উচ্ছৃঙ্খল জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে গুলি ছোড়ে। এতে শরীফ নামে এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন।
এজাহারে বলা হয়, আয়োজক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের সদস্যরা যুক্ত হয়ে অরাজকতা সৃষ্টি করে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মুক্ত করার দাবিতে বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের অভিযোগ আনা হয়।
জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে কনস্টেবল শাহরিয়ার হোসেন ২ রাউন্ড, জাফর আহমেদ ২ রাউন্ড ও কবির হোসেন ৬ রাউন্ড শর্টগান থেকে মোট ১০ রাউন্ড রাবার কার্তুজের ফাঁকা ফায়ার করেন।
এই ঘটনায় এসআই রফিকুল ইসলাম ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৭০-৮০ জনের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইনে মামলা করেন। সংঘর্ষের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দেখা যায় একটি পক্ষ কনভেনশন সেন্টারের মূল ফটক ভাঙচুরের চেষ্টা করছে।
ঘটনার পর বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরাও ঘটনাস্থলের বাইরে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন। পুলিশ পুরো এলাকা ঘিরে রেখে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।