রবিবার । ডিসেম্বর ৭, ২০২৫
ড. শরিফুল ইসলাম দুলু বিজনেস ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১১:২৩ অপরাহ্ন
শেয়ার

বাংলাদেশ মার্কেটিং ডে: মার্কেটারদের সবচেয়ে বড় উৎসব


MIB

দেশের মার্কেটিং ও সেলস পেশাজীবীদের জন্য বছরের বিশেষ দিন বাংলাদেশ মার্কেটিং ডে পালিত হবে ১৭ অক্টোবর শুক্রবার। এই দিনটি শুধু একটি উৎসব নয়, বরং এমন এক দিন যেখানে দেশের হাজারো মার্কেটার ও বিক্রয়কর্মী একত্র হয়ে তাদের কাজ, সাফল্য ও ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা নিয়ে ভাবেন।

২০১৮ সালে মার্কেটার্স ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (এমআইবি) প্রথম এই দিনটি উদযাপন শুরু করে। তখন থেকেই এটি দেশের মার্কেটিং পেশাজীবীদের অন্যতম বড় আয়োজন হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

মার্কেটিং ডে’র সূচনা
২০১৮ সালের আগে বাংলাদেশে মার্কেটিং পেশাজীবীদের নিজেদের সাফল্য উদযাপনের কোনো নির্দিষ্ট দিন ছিল না। তারা ব্র্যান্ড তৈরি করেছেন, গ্রাহকদের কাছে পণ্য পৌঁছে দিয়েছেন, ব্যবসা বাড়িয়েছেন—কিন্তু তাদের জন্য কোনো জাতীয় স্বীকৃতি ছিল না।

এই অভাব পূরণ করতে এমআইবি বাংলাদেশ মার্কেটিং ডে উদযাপন শুরু কর। লক্ষ্য ছিল— দেশের প্রায় ৫০ লাখ মার্কেটিং ও সেলস পেশাজীবীকে একত্রে যুক্ত করা এবং এই পেশাকে আরও সম্মানজনক ও প্রভাবশালী করে তোলা।

একদিনে দেশের সব মার্কেটার একসাথে
এখন এই দিনটি মার্কেটিং পেশাজীবীদের সবচেয়ে বড় মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। ব্র্যান্ড বিশেষজ্ঞ, শিল্পপতি, শিক্ষক, গবেষক, ও বিক্রয়কর্মীরা সবাই অংশ নেন দিনব্যাপী নানা আলোচনা, প্রশিক্ষণ, পুরস্কার ও উদ্ভাবন প্রদর্শনীতে।

এবারের মূল প্রতিপাদ্য: Marketing Wellbeing
২০২৫ সালের থিম “Marketing Wellbeing” বা “কল্যাণমুখী মার্কেটিং”। অর্থাৎ এখন মার্কেটিংয়ের লক্ষ্য শুধু মুনাফা নয়, মানুষের কল্যাণও।

বর্তমান পৃথিবীতে মানসিক চাপ, ভুয়া তথ্য আর পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ বাড়ছে। তাই এবার আলোচনা হচ্ছে—মার্কেটিং কীভাবে মানুষকে আরও সচেতন, সহমর্মী ও সৎ হতে সাহায্য করতে পারে।

সবার জন্য উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্ম
এই দিনটি শুধু বড় কোম্পানির কর্মকর্তাদের জন্য নয়। এতে অংশ নেন গ্রাম থেকে শহরের সব পর্যায়ের মার্কেটার ও বিক্রয়কর্মী। এ দিন বিক্রয়পেশাজীবীরাও স্বীকৃতি পান দেশের অর্থনীতির ফ্রন্টলাইন যোদ্ধা হিসেবে—যারা ব্র্যান্ডের বার্তা মানুষের জীবনে পৌঁছে দেন।

আয়োজনে থাকে নানা সেশন—যেমন NextGen Leadership, Sales Leadership in Innovation & Transformation, Women Leadership in Marketing এবং University–Industry Collaboration—যা তরুণ প্রজন্ম, নারী ও নতুন উদ্যোক্তাদের অনুপ্রাণিত করে।

শিক্ষা ও অনুপ্রেরণার উৎসব
বাংলাদেশ মার্কেটিং ডে এখন শুধু একটি অনুষ্ঠান নয়, এটি একটি আন্দোলন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মার্কেটিং ফেস্ট, কোম্পানিতে অভ্যন্তরীণ উদযাপন, এমনকি শিক্ষার্থীদের মধ্যে পেশাটির প্রতি আগ্রহ—সবই এই উদ্যোগের প্রভাব। এমআইবির নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও মার্কেটিংয়ে শক্ত অবস্থান তৈরি করছে।

ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা
বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের নতুন পথে হাঁটছে। শিল্প, রপ্তানি, ডিজিটাল যোগাযোগ বা টেকসই ব্যবসা—সবখানেই মার্কেটিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আগামী দিনেও বাংলাদেশ মার্কেটিং ডে হবে পেশাজীবীদের চিন্তা, শেখা ও অনুপ্রেরণার জায়গা—যেখানে তারা ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা খুঁজে পাবেন।

কারণ, মার্কেটিং শুধু পণ্য বিক্রি নয়—এটি যা গুরুত্বপূর্ণ, তা তৈরি করার শিল্প। আর এই বিশ্বাসকেই নতুন করে জাগিয়ে তোলে বাংলাদেশ মার্কেটিং ডে।

 ড. শরিফুল ইসলাম দুলু: সদস্যসচিব, মার্কেটার্স ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (এমআইবি)