
মরমী সাধক ফকির লালন শাহের ১৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ঢাকায় “লালন সন্ধ্যা” শীর্ষক এক সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করে ভারতীয় হাই কমিশন। ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের আয়োজনে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে শিল্পী, গবেষক, সঙ্গীতপ্রেমী ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেন।
অনুষ্ঠানটি উৎসর্গ করা হয় ভারত ও বাংলাদেশের অভিন্ন আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক লালন শাহকে। তাঁর সম্প্রীতি, মানবতা ও ধর্মনিরপেক্ষতার দর্শন দুই দেশের ভক্তি, সুফি ও বাউল ঐতিহ্যের মেলবন্ধনকে নতুনভাবে স্মরণ করিয়ে দেয়।
সন্ধ্যাটি ছিল কিংবদন্তি লালন গীতির শিল্পী ফরিদা পারভীন (১৯৫৪–২০২৪)-এর প্রতিও শ্রদ্ধাঞ্জলি। একুশে পদক ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত এই শিল্পীর অবদান লালন ঐতিহ্য সংরক্ষণে অনন্য ভূমিকা রাখে বলে অনুষ্ঠানে বক্তারা উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী বক্তৃতায় ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেন, “লালনের মানবতা, সম্প্রীতি ও সহমর্মিতার বার্তা দুই দেশের সাংস্কৃতিক বন্ধনকে আরও দৃঢ় করেছে।” তিনি আরও বলেন, ফরিদা পারভীনের গান ভারত ও বাংলাদেশের মানুষের মাঝে এক সাংস্কৃতিক সেতু তৈরি করেছে।
অনুষ্ঠানে পরিবেশিত হয় ফরিদা পারভীনের স্মৃতিচারণে নিবেদিত সংগীতানুষ্ঠান, যেখানে অংশ নেন তাঁর স্বামী একুশে পদকপ্রাপ্ত বাঁশিবাদক গাজী আবদুল হাকিম, তাঁর শিষ্যা বিউটি এবং অচিন পাখি কালচারাল একাডেমির শিল্পীরা।
এ ছাড়াও ছিল চন্দনা মজুমদার, কিরণ চন্দ্র রায়, টুনটুন বাউল ও তাঁর দলের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা। লালন গবেষক আবদেল মান্নান লালনের দর্শন ও বর্তমান প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে আলোচনা করেন।
সন্ধ্যার শেষাংশে ‘লালন’ ব্যান্ডের আধুনিক সংগীত পরিবেশনা দর্শকদের মুগ্ধ করে। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন জনপ্রিয় অভিনেতা আফজাল হোসেন।