
আওয়ামী লীগের দেড় দশকের শাসনামলে গুম-খুনের মাধ্যমে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক তিন মামলায় হেফাজতে থাকা ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
বুধবার (২২ অক্টোবর) সকালে ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন। বেঞ্চের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এর আগে আজ সকাল ৭টার দিকে বাংলাদেশ জেল প্রিজনভ্যানের গাড়িতে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে সেনা কর্মকর্তাদের ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। তারা সবাই সাধারণ পোশাকে ছিলেন।
মামলার একটি বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে গুম-নির্যাতনের মাধ্যমে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায়। অন্যটি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর রামপুরা ও বনশ্রী এলাকায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায়।
যেসব কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কে. এম. আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন এবং কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (বর্তমানে অবসরকালীন ছুটিতে)।
এ ছাড়া র্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম, বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা মেজর মো. রাফাত-বিন-আলম এবং ডিজিএফআইয়ের সাবেক তিন পরিচালক—মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকীকেও জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে সেনা কর্মকর্তাদের হাজিরা ঘিরে রাজধানীর কাকরাইল, মৎস্য ভবন, পল্টনসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নেওয়া হয় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ভোর থেকেই ট্রাইব্যুনাল ও হাইকোর্ট মাজারগেট এলাকায় পুলিশের পাশাপাশি র্যাব, বিজিবি ও সেনা সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।