ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মশার সন্ধান পাওয়া গেলো বিশ্বের মশামুক্ত অঞ্চল খ্যাত আইসল্যান্ডে। দেশটিতে রেকর্ড ভাঙা তাপমাত্রা বিরাজের পরই এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম।
স্থানীয় কীটপ্রেমী বিয়র্ন হ্যালটাসন কয়েক রাত ধরে মথ বা পতঙ্গ পর্যবেক্ষণের সময় ওয়াইন মাখানো দড়ি ব্যবহার করেন। সেই সময়ই তিনি দুটি স্ত্রী ও একটি পুরুষ মশার সন্ধান পান। পরে সেগুলো শনাক্ত করে দেশটির প্রাকৃতিক ইতিহাস ইনস্টিটিউট নিশ্চিত করে যে, এটি এমন এক প্রজাতির মশা, যেটি শীতকালেও টিকে থাকতে সক্ষম।
হ্যালটাসন জানান, রেইকিয়াভিকের দক্ষিণ-পশ্চিমের গ্লেসিয়াল উপত্যকা কিয়োস এলাকায় তিনি মশাগুলো খুঁজে পান। স্থানীয় বন্যপ্রাণী বিষয়ক একটি ফেসবুক গ্রুপে তিনি ছবিসহ তার সন্ধান পাওয়ার কথা জানান। সেখানে তিনি লিখেছেন, লাল ওয়াইনের ফিতায় অদ্ভুত এক মাছি বসেছিল। আমি সঙ্গে সঙ্গেই বুঝে ফেলি, এটি আগে কখনও দেখিনি। মনে হচ্ছে শেষ দুর্গেরও পতন ঘটলো।
আরও পড়ুন: আইসল্যান্ড পৃথিবীর একমাত্র মশাবিহীন দেশ, কিন্তু কেন!
আইসল্যান্ড আগে বিশ্বের দুটি মশামুক্ত অঞ্চলের একটি ছিল। অপরটি ছিল অ্যান্টার্কটিকা। বিশ্ব জনসংখ্যা পর্যালোচনা সংস্থার তথ্য মতে, দেশটির তীব্র শীত ও জমাট পানির অভাবের কারণে এতদিন মশার প্রজনন সম্ভব হয়নি।
আইসল্যান্ডিক ইনস্টিটিউট অব ন্যাচারাল হিস্টরির কীটতত্ত্ববিদ মাথিয়াস আলফ্রেদসন বলেন, ইউরোপ ও উত্তর আফ্রিকার অনেক এলাকায় এই প্রজাতি সাধারণ হলেও আইসল্যান্ডে এটি আগে কখনও পাওয়া যায়নি। তবে কীভাবে এগুলো এখানে এলো, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
তিনি জানান, আগামী বসন্তে আরও পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যাবে যে, প্রজাতিটি সত্যিই দেশে স্থায়ী হয়েছে কিনা।
এ বছর আইসল্যান্ডে মে মাসে একটানা ১০ দিন ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে তাপমাত্রা ছিল, যা দেশটির ইতিহাসে নজিরবিহীন। এমনকি পূর্বাঞ্চলের এগলিসস্টাদির বিমানবন্দরে সর্বোচ্চ ২৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়, যা মে মাসের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড।
গ্লোবাল হিট হেলথ ইনফরমেশন নেটওয়ার্কের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, এই ধরনের উষ্ণতার ধারা আইসল্যান্ডের মতো ঠান্ডা জলবায়ুর জন্য অভিযোজিত নাজুক প্রতিবেশব্যবস্থায় ‘গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব’ ফেলতে পারে।
এদিকে হ্যালটাসন ধারণা করছেন, তার সন্ধান পাওয়া মশাগুলো হয়তো কাছাকাছি বন্দর শহর গ্রুন্দারতাঙ্গি থেকে এসেছে। তিনি বলেন, সেখানে নিয়মিত জাহাজ আসে, কনটেইনারে বিভিন্ন জিনিস আসে। হতে পারে, কোনও চালানের সঙ্গেই এগুলো এসেছে। যদি আমার বাগানে তিনটি আসে, তবে আশপাশে আরও অনেক থাকতে পারে।
সূত্র: বিবিসি




























