ছবি : সংগৃহীত
তরুণ প্রজন্ম ‘জেন জি’-এর নেতৃত্বে দেশজুড়ে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে পেরু। ক্রমবর্ধমান বিক্ষোভ ও অপরাধ দমনে রাজধানী লিমায় ৩০ দিনের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন দেশটির অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হোসে জেরি।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে প্রেসিডেন্ট জেরি বলেন, “যুদ্ধ কথায় নয়, কাজে জেতা যায়।” তিনি জানান, এবার অপরাধ দমনে সরকার নতুন কৌশল গ্রহণ করবে—‘প্রতিরক্ষা থেকে আক্রমণে যাওয়ার’ উদ্যোগ নেওয়া হবে।
জরুরি অবস্থার আওতায় সেনাবাহিনীকে রাস্তায় টহলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে নাগরিকদের সমাবেশসহ বিভিন্ন সাংবিধানিক অধিকার সীমিত থাকবে।
ছয় দিনের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার পর অবশেষে এই পদক্ষেপ নিল পেরুর অন্তর্বর্তী সরকার। তবে সরকারি ঘোষণায় উল্লেখ করা হয়নি, দেশজুড়ে চাঁদাবাজি ও চোরাচালান দমনে কীভাবে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করা হবে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ বছর পেরুতে প্রায় ১৮ হাজার চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটেছে—যা গত বছরের তুলনায় ৩০ শতাংশ বেশি। একই সময়ে হত্যাকাণ্ডও বেড়েছে। জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে ১ হাজার ৬৯০টি হত্যার ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে, যেখানে গত বছরের একই সময়ে এ সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৫০২।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জরুরি অবস্থার ফলে জনগণ তাদের সাংবিধানিক বিক্ষোভের অধিকার হারাবে।
গত ১০ অক্টোবর দুর্নীতি ও অপরাধ দমনে ব্যর্থতার অভিযোগে সাবেক প্রেসিডেন্ট দিনা বোলুয়ার্তেকে কংগ্রেস অভিশংসনের মাধ্যমে অপসারণ করে। এরপর সংসদের স্পিকার হোসে জেরি অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন, যিনি আগামী জুলাই পর্যন্ত দায়িত্বে থাকবেন।
দেশজুড়ে দুর্নীতি ও সংগঠিত অপরাধবিরোধী আন্দোলনে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ চলছে, যেখানে নেতৃত্ব দিচ্ছে জেন জি প্রজন্ম। গত বৃহস্পতিবার জেরির পদত্যাগ দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে একজন নিহত হন এবং প্রায় ১০০ জন আহত হন। তবে প্রেসিডেন্ট জেরি জানিয়েছেন, তিনি পদত্যাগ করবেন না।
এর আগে মার্চ মাসে সাবেক প্রেসিডেন্ট বোলুয়ার্তেও সংগীতশিল্পী পল ফ্লোরেস খুনের পর ৩০ দিনের জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন। তবে সে সময়ও অপরাধ কমেনি। ফ্লোরেসকে হত্যা করা হয় একটি বাসে, যেখানে হামলার পেছনে চাঁদাবাজির উদ্দেশ্য ছিল বলে ধারণা করা হয়।
