
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস জেরাল্ড ফোর্ড
ভেনেজুয়েলার সরকারের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য পদক্ষেপের জল্পনার মধ্যেই লাতিন আমেরিকায় সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এ অঞ্চলে একটি বিমানবাহী রণতরী পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর—যা সেখানে তাদের সামরিক শক্তির বড় ধরনের সম্প্রসারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের মুখপাত্র জানিয়েছেন, প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথের নির্দেশে ইউএসএস জেরাল্ড ফোর্ড (যা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বিমানবাহী রণতরী) এবং এর সঙ্গে থাকা পাঁচটি ডেস্ট্রয়ার বা ধ্বংসকারী যুদ্ধজাহাজ লাতিন আমেরিকায় পাঠানো হচ্ছে।
পেন্টাগন মুখপাত্র শন পারনেল এক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্টে বলেন, ‘ইউএস সাউথকম এলাকায় বাড়তি মার্কিন সামরিক উপস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও পশ্চিম গোলার্ধের স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলা অবৈধ কার্যক্রম শনাক্ত, পর্যবেক্ষণ ও প্রতিহত করবে।’
তবে পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এই সামরিক উপস্থিতি ট্রাম্প প্রশাসনের ঘোষিত মাদকবিরোধী অভিযানের লক্ষ্যকে ছাড়িয়ে গেছে। এটি ভেনেজুয়েলার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান কঠোর অবস্থানেরই প্রতিফলন—দেশটি দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের নীতিগত বিরোধিতার মুখে রয়েছে।
বর্তমানে লাতিন আমেরিকার জলসীমায় যুক্তরাষ্ট্রের আটটি যুদ্ধজাহাজে প্রায় ৬,০০০ নৌসেনা ও মেরিন মোতায়েন রয়েছে। এবার যুক্ত হচ্ছে ইউএসএস জেরাল্ড ফোর্ড এবং এর সঙ্গে থাকা পাঁচটি ডেস্ট্রয়ার, সঙ্গে আরও প্রায় ৪,৫০০ অতিরিক্ত সেনা। রণতরীটি বর্তমানে ভূমধ্যসাগরে অবস্থান করছে, তবে কবে এটি লাতিন আমেরিকায় পৌঁছাবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়।
গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, তিনি ভেনেজুয়েলায় অভিযান চালানোর জন্য মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএকে অনুমোদন দিয়েছেন। তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, শিগগিরই ভেনেজুয়েলার ভূখণ্ডে সামরিক হামলা চালানো হতে পারে।
এ পদক্ষেপের যৌক্তিকতা হিসেবে ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করছে, প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকার মাদক ও অভিবাসনকে হাতিয়ার করে যুক্তরাষ্ট্রে ‘আক্রমণের’ পরিকল্পনা করছে। তবে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভেনেজুয়েলা বৈশ্বিক মাদক ব্যবসায় অতি নগণ্য ভূমিকা রাখে এবং মাদুরো সরকার অপরাধী গোষ্ঠীগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করছে—এমন কোনো প্রমাণও পাওয়া যায়নি।
গত সেপ্টেম্বর থেকে যুক্তরাষ্ট্র বারবার এমন কিছু জাহাজে হামলা চালিয়েছে, যেগুলোকে তারা ভেনেজুয়েলা থেকে মাদক পরিবহনের অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সুনির্দিষ্ট প্রমাণ হাজির করতে পারেনি তারা। জাতিসংঘের কর্মকর্তারা ও আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব হামলা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের শামিল এবং তা “বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড।”
এদিকে ভেনেজুয়েলা বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র যদি তাদের সরকার উৎখাতের চেষ্টা করে, তবে তারা কঠোরভাবে জবাব দেবে।




























