রবিবার । ডিসেম্বর ৭, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক দেশজুড়ে ১ নভেম্বর ২০২৫, ৯:৪৩ পূর্বাহ্ন
শেয়ার

মেয়েকে শেষবার দেখতে হেলিকপ্টারে ছুটে এলেন আফ্রিকা প্রবাসী বাবা


cumilla

একমাত্র মেয়েকে শেষবিদায় জানাতে হেলিকপ্টারে ছুটে এলেন প্রবাসী বাবা।

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে পানিতে ডুবে মারা যায় তিন বছর বয়সী শিশু আরওয়া। খবর শুনে আফ্রিকা প্রবাসী বাবা ওসমান গণি শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে ছুটে এলেন হেলিকপ্টারে। আদরের কন্যাকে শেষবারের মতো দেখলেন, ছুঁয়ে আদর করলেন। অঝোরে নিজে কাঁদলেন, কাঁদালেন সবাইকে।

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) এমনই হৃদয়বিদারক দৃশ্য দেখা যায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামে।

স্থানীয় গুণবতী স্কুল মাঠে অবতরণ করা হেলিকপ্টার দেখতে উৎসুক জনতার ভিড়ে ছিল না কোনো হই-হুল্লোড়। সবাই দেখলেন হেলিকপ্টার থেকে নেমে ক্ষিপ্র গতিতে এক বাবার ছুটে যাওয়ার দৃশ্য।

স্থানীয়রা জানান, ওসমান গণি দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে আফ্রিকা থাকেন। সেখানে গড়ে তুলেছেন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। বিয়ের পর কন্যা আরওয়ার জন্ম হয়। চলতি বছর ছুটিতে এসে আট মাস মেয়ের সঙ্গে কাটিয়ে আগস্টে ফিরে যান। বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় বাড়ির সামনে পুকুরের পানিতে ডুবে প্রাণ যায় শিশু আরওয়া।

একমাত্র মেয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে টিকিট কেটে ওসমান গণি শুক্রবার সকালে দেশে ফেরেন। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারে চড়ে সকাল ১০টায় পৌঁছান এলাকায়। জানাজায় অংশ নিয়ে কলিজার টুকরা একমাত্র কন্যাকে দাফন করেন। এসময় উপস্থিত মুসল্লিরা চোখে পানি ধরে রাখতে পারেননি। এ ঘটনায় এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

ওসমান গণির বন্ধু মো. ইস্রাফিল বলেন, ‌‘মেয়েকে শেষবারের মতো দেখার ইচ্ছা শুনে আমরা লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়িতে আরওয়ার মরদেহ রাখার ব্যবস্থা করি।’

ওসমান গণির ফুফা সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘মেয়ের মৃত্যুর খবরটি আমরা বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় বাদলকে জানালে পরদিন সকালেই সে এসে হাজির হয়।’

একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে কন্যাজড়িত কণ্ঠে প্রবাসী ওসমান গণি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বাড়ি থেকে খবর পাই, আমার মেয়ে পানিতে ডুবে মারা গেছে। মেয়েটার সঙ্গে হাজারো স্মৃতি। আরওয়া ভাঙা ভাঙা শব্দে আমার সঙ্গে কথাও বলত। একমাত্র সন্তানের মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিলাম না। তাই সন্তানকে নিজ হাতে দাফন করতে বাড়িতে আসার সিদ্ধান্ত নিই।’