
শক্তিশালী ক্যাটাগরি-৫ ঘূর্ণিঝড় ‘মেলিসা’র আঘাতে ক্যারিবীয় দ্বীপরাষ্ট্র জ্যামাইকা ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দক্ষিণ উপকূলের বন্দরনগর ব্ল্যাক রিভার এখন পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ঝড় আঘাত হানার কয়েক দিন পরও সেখানে খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও বিদ্যুতের কোনো ব্যবস্থাই চালু হয়নি। ত্রাণ সহায়তা পৌঁছাতে বিলম্ব হওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে দেখা দিয়েছে তীব্র হতাশা ও উৎকণ্ঠা।
স্থানীয় বাসিন্দা জিমি এসন বিবিসিকে বলেন, “আমাদের কোনো খাবার নেই, আমাদের খাবার দরকার। আমার বাড়ি, দোকান- সবই ঝড়ে ধ্বংস হয়ে গেছে।”
ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পুরো শহরে এখন সর্বত্র ধ্বংসের চিহ্ন। ভাঙা ঘরবাড়ি, উল্টে থাকা নৌকা ও কাদামাটি- যেদিকে চোখ যায় কেবল বিপর্যয়। খাদ্য ও পানির সন্ধানে অনেকেই ধ্বংসস্তূপ থেকে সামান্য যা পাচ্ছেন, তা ভাগাভাগি করে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছেন।
ডেমার ওয়াকার, এক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, “আমরা যা পাই তাই খাই। দোকান থেকে খাবার-পানি বের করে অন্যদেরও দিচ্ছি। এখন সবাই শুধু বাঁচার চেষ্টা করছে।”
এখনো ব্ল্যাক রিভারে কোনো ত্রাণ ট্রাক পৌঁছায়নি। বিদ্যুৎ-পানিসহ যোগাযোগব্যবস্থা সম্পূর্ণ অচল। শহরের ৯০ শতাংশ ভবন ধ্বংস হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় মেয়র রিচার্ড সলোমন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাসপাতাল, পুলিশ স্টেশন ও ফায়ার স্টেশনও।
মেয়র সলোমন বলেন, “মানুষ লুটপাট করছে আমরা বলছি না, কিন্তু তাদের ক্ষুধা আর হতাশা বোঝা যায়।”
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, জ্যামাইকার বিভিন্ন এলাকায় এখন পর্যন্ত অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রতিবেশী হাইটিতে মারা গেছে আরও ৩০ জন। অনেক পরিবার এখনো নিখোঁজ স্বজনদের খুঁজছেন- কারণ ফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন।
ত্রাণ পাঠানো শুরু হলেও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় তা পৌঁছাতে বড় বাধা হয়ে আছে ভেঙে পড়া সড়ক ও জলাবদ্ধতা। শুক্রবার বিকেলে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার ও ত্রাণকর্মীদের একটি দল প্রথমবারের মতো ব্ল্যাক রিভারে সহায়তা পৌঁছাতে সক্ষম হয়।
বাসিন্দা শন মরিসের আর্তি- “এটা টাকার ব্যাপার নয়। আমাদের শুধু খাবার আর পানি দরকার। আমরা বাঁচতে চাই।”
সূত্র: বিবিসি