রবিবার । ডিসেম্বর ৭, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ৪ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৪১ পূর্বাহ্ন
শেয়ার

ইন্টারনেটের দাম ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়বে: আইএসপিএবি


Internet

ফাইল ছবি

দেশে নতুন খসড়া ইন্টারনেট নীতিমালা কার্যকর হলে গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেটের খরচ ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)।

সোমবার (৩ নভেম্বর) রাজধানীর মহাখালীর রাওয়া ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি আমিনুল হাকিম ও মহাসচিব নাজমুল করিম ভূঁইয়া এ আশঙ্কার কথা জানান।

আইএসপিএবির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রস্তাবিত নীতিমালায় অতিরিক্ত ফি, রাজস্ব ভাগাভাগি এবং লাইসেন্স নবায়নের উচ্চ ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে শুধু গ্রাহকের সেবামূল্যই নয়, দেশীয় ইন্টারনেট উদ্যোক্তাদের খরচও উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, “নতুন নীতিমালায় বিদেশি প্রতিষ্ঠান স্টারলিংকের পক্ষে সুবিধাজনক শর্ত দেওয়া হয়েছে। তারা মাত্র ১২ লাখ টাকায় অনুমোদন পাচ্ছে, অথচ স্থানীয় কোম্পানিগুলোকে দ্বিগুণেরও বেশি অর্থ দিয়ে লাইসেন্স নবায়ন করতে হচ্ছে। এটা সম্পূর্ণ বৈষম্য।”

তিনি আরও বলেন, “মোবাইল ফোন অপারেটররা প্রায় সব সুবিধা পাচ্ছে, অথচ অধিকাংশই বিদেশি প্রতিষ্ঠান। এতে দেশীয় উদ্যোক্তারা প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারছেন না। রাষ্ট্রের স্বার্থে এই নীতিগত বৈষম্যের ব্যাখ্যা জরুরি।”

স্বাগত বক্তব্যে মহাসচিব নাজমুল করিম ভূঁইয়া বলেন, “প্রস্তাবিত গাইডলাইন বাস্তবায়িত হলে ইন্টারনেটের দাম বাড়বে, পাশাপাশি গ্রাহকদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হবে। এটা জনগণের স্বার্থবিরোধী। আমরা চাই, নীতিনির্ধারকরা জনগণের পক্ষে সিদ্ধান্ত নিন।”

তিনি আরও যোগ করেন, “ইন্টারনেট এখন বিলাস নয়, মৌলিক সেবা। এর খরচ বাড়ানো মানে ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় বাধা সৃষ্টি করা।”

আইএসপিএবির হিসাব অনুযায়ী, নতুন নীতিমালায় গ্রাহক পর্যায়ে খরচ বাড়বে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ পর্যন্ত, আর ফিক্সড টেলিকম সার্ভিস প্রোভাইডারদের (এফটিএসপি) ক্রয়মূল্য বাড়বে প্রায় ১৪ শতাংশ। এছাড়া নতুন করে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ রাজস্ব ভাগাভাগি এবং ১ শতাংশ সোশ্যাল অবলিগেশন ফান্ড আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। সংগঠনটির দাবি, এসব অতিরিক্ত চার্জ ও লাইসেন্স ফি সরাসরি ব্রডব্যান্ড প্যাকেজের মূল্য বৃদ্ধি করবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, খসড়া নীতিমালায় মোবাইল অপারেটরদের ফিক্সড ওয়্যারলেস এক্সেস এবং লাস্ট মাইল ফাইবার সংযোগ দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, যা স্থানীয় আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য অন্যায্য প্রতিযোগিতা তৈরি করবে। এতে দেশীয় উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ ঝুঁকির মুখে পড়বে।

এই পরিস্থিতিতে আইএসপিএবি তাদের সাত দফা দাবি উপস্থাপন করেছে। সংগঠনটির দাবিগুলো হলো— সিএমএসপি গাইডলাইন থেকে এফডব্লিউএ বা ওয়্যারলেস ওয়াই-ফাই সংযোগ অপসারণ, সিএমএসপি গাইডলাইন থেকে ফাইবার কানেক্টিভিটি স্থাপনের অনুমতি বাতিল, আইএসএম/ওয়াইফাই ব্যান্ডের বাণিজ্যিক ব্যবহার নিষিদ্ধ, অবকাঠামো শেয়ারিং সংক্রান্ত স্পষ্ট নির্দেশনা প্রদান, রেভিনিউ শেয়ারিং ও লাইসেন্স ফি পুনর্বিবেচনা, আইপিটিএসপি এসএমএস সার্ভিস ও মোবাইল ডায়ালার বিষয়ে স্পষ্ট দিকনির্দেশনা, এফটিএসপি ও জেলা এফটিএসপি অপারেটরদের মধ্যে বৈষম্য দূর করা।