
আবু সিদ্দিকের কলাবাগান
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার সৌদি ফেরত আবু সিদ্দিকের জীবনে একসময় নেমে এসেছিল হতাশা। বিদেশে পাড়ি জমিয়েছিলেন পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে, কিন্তু অসুস্থতা ও কর্মহীনতার কারণে প্রবাস জীবনে তেমন সাফল্য পাননি। দেশে ফিরে নতুন করে শুরু করেন জীবনের লড়াই—আর সেই লড়াইয়ের জয়ের গল্প এখন তাঁর কলা বাগানে।
দেড় বছর আগে পরিত্যক্ত এক একর জমি ভাড়া নিয়ে রোপণ করেন ৩২০টি মেহের সাগর জাতের কলা। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে যত্ন ও শ্রমে গড়ে তোলেন তাঁর কলাবাগান। এখন সারি সারি কলাগাছে ঝুলছে পাকা কলার ছড়া—প্রতিটি গাছে ৮০ থেকে ১৫০টি কলা।
সিদ্দিক জানান, জমি ভাড়া, চারা, সার ও শ্রম খরচ মিলিয়ে প্রায় ৮০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে তাঁর। ইতোমধ্যে কলা বিক্রি করে আয় করেছেন আড়াই লাখ টাকার বেশি। মাসে গড়ে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা লাভ হচ্ছে।
সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি সম্প্রতি আরও ২ বিঘা জমিতে ৬০০টি নতুন কলাগাছ রোপণ করেছেন। বলেন, “প্রথমবার চারা কিনতে খরচ হয়েছিল, এখন গাছ থেকেই চারা পাওয়া যায়। খরচ কমে গেছে অর্ধেকে। সব ঠিক থাকলে প্রতিবছর এই বাগান থেকেই সাড়ে তিন লাখ টাকা আয় সম্ভব।”
লোহাগাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সরোয়ার আলম বলেন, “আবু সিদ্দিক পরিশ্রমী ও উদ্যমী একজন মানুষ। সঠিক সময়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেই আজ তিনি সফল। আমরা তাঁকে সার ও আর্থিক সহায়তা দিয়েছি।”
একসময় প্রবাস জীবনের কষ্টে ভেঙে পড়া আবু সিদ্দিক এখন এলাকার অনুপ্রেরণা। তিনি বলেন, “বিদেশে ভাগ্য বদলায়নি, কিন্তু দেশে ফিরে কলা চাষেই এখন স্বপ্ন দেখি, সুখ দেখি।”