
ফিলিপাইনে ঘূর্ণিঝড় ‘কালমায়েগি’র তাণ্ডবে গত সপ্তাহে প্রাণ হারিয়েছে ২০৪ জন। এর প্রভাব কাটতে না কাটতেই দিকে এবার দেশটির দিকে ধেয়ে আসছে আরেক টাইফুন ‘ফাং-ওং’। এ অবস্থায় শনিবার (৮ নভেম্বর) ফিলিপাইনের আবহাওয়া ব্যুরো প্রাণঘাতী ঝড়ো হাওয়া এবং ধ্বংসাত্মক বাতাসের বিষয়ে সতর্ক করেছে।
আবহাওয়া ব্যুরো জানিয়েছে, টাইফুন ‘ফুং-ওং’ দেশের পূর্ব উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। এটি সুপার টাইফুনে পরিণত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, আগামীকাল রোববার রাতে নতুন এই ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে। ১৫০০ কিলোমিটার বিস্তৃত এই টাইফুনের বিশাল প্রবাহে ইতোমধ্যেই পূর্ব ফিলিপাইনের কিছু অংশে ভারী বৃষ্টিপাত এবং বাতাস বয়ে যাচ্ছে।
কর্তৃপক্ষ জনগণকে সতর্ক করে বলেছে, ‘এটি প্রায় পুরো দেশকে আচ্ছন্ন করতে পারে।’
‘ফুং-ওং’ এর স্থানীয় নাম ‘উওয়ান’। এর প্রভাবে বর্তমানে সর্বোচ্চ ১৭০ কিলোমিটার ঘণ্টা বেগে দমকা হাওয়া বইছে। ভূমির কাছাকাছি আসার সঙ্গে সঙ্গে সাথে গতিবেগ ১৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত তীব্র হতে পারে।
আবহাওয়া ব্যুরো বলছে, এটি ঘরবাড়ি ধ্বংস, গাছপালা এবং কাঠামো উপড়ে ফেলার মতো শক্তিশালী।
পূর্ব ফিলিপাইনের প্রদেশগুলোতে, বিশেষ করে বিকোল অঞ্চলের পাশাপাশি সামারের কিছু অংশে ২০০ মিমি পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এটি ব্যাপক বন্যা এবং ভূমিধসের ঝুঁকি বাড়িয়েছে। অন্যদিকে উত্তর ও মধ্য লুজনে ১০০-২০০ মিমি বৃষ্টিপাত হতে পারে।
নিম্নভূমি এবং উপকূলীয় অঞ্চলের বাসিন্দাদের উঁচু ভূমিতে সরে যেতে এবং সমস্ত সামুদ্রিক কার্যকলাপ বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। উপকূলীয় সম্প্রদায়গুলো প্লাবিত হতে পারে- এমন ধ্বংসাত্মক ঝড়ের সতর্কতা জারি হয়েছে।
বেশ কয়েকটি স্থানীয় সরকার আগামী সোমবার ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত করেছে। ফিলিপাইনের পতাকাবাহী বিমান সংস্থা ফুং-ওং-এর প্রত্যাশিত আঘাতের আগে কিছু ফ্লাইটও বাতিল করেছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার থেকে ফিলিপাইনে তাণ্ডব চালিয়েছে টাইফুন ‘কালমায়েগি’। এর প্রভাবে উপকূলীয় বহু ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে, গাছপালা উপড়ে পড়েছে, এমনকি ছোট ভবনগুলোর ছাদ ও জানালা ভেঙে গেছে।
এর বিস্তৃত প্রভাবে ফিলিপাইনে ২০৪ জন এবং ভিয়েতনামে পাঁচ জন প্রাণ হারায়। সেই সঙ্গে লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত এবং বিস্তীর্ণ এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
কালমায়েগি’র প্রভাবে ভিয়েতনামের দুর্যোগ সংস্থা প্রায় ২৮০০টি বাড়ির ক্ষতির কথা জানিয়েছে। এখনো প্রায় ৫ লাক মানুষ বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় টাইফুন বেল্টের পাশে অবস্থিত হওয়ায় ভিয়েতনাম এবং ফিলিপাইন গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড় এবং টাইফুনের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। দেশ দুটি ঝড়ের মৌসুমে নিয়মিত ক্ষয়ক্ষতি এবং হতাহতের সম্মুখীন হয়।
বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ‘কালমায়েগি’ কিংবা ‘ফাং-ওং’-এর মতো ঝড়গুলো আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে।




























