
সিলেট টেস্টের দ্বিতীয় দিনে পুরো সময়টা ছিল বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে। সকালে মাত্র ২.২ ওভার টিকেছিল আয়ারল্যান্ডের প্রথম ইনিংস- ১৬ রান যোগ করতেই ২৮৬ রানে গুটিয়ে যায় তারা। এরপর ব্যাট হাতে দুর্দান্ত জ্বলে ওঠেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম ও মাহমুদুল হাসান জয়। দিন শেষে ৮৫ ওভার শেষে ১ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩৩৮ রান, অর্থাৎ ৫২ রানের লিডে দিন শেষ করেছে স্বাগতিকরা।
টেস্ট ক্যারিয়ারে একাধিকবার সেঞ্চুরি হাতছাড়া করা সাদমান ইসলাম এবারও ভাগ্যবান হতে পারলেন না। ৮০ রানে আউট হয়ে ফেরেন তিনি। বাঁ-হাতি ব্যাটারটি ১০৪ বল মোকাবিলা করে ৯টি চার ও এক ছক্কায় সাজান ইনিংসটি- নিজের ফিফটি ছোঁয়া ইনিংসগুলোর মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত রান তোলেন (স্ট্রাইক রেট ৭৬.৯২)।
তবে সাদমানের এই ইনিংসেই বাংলাদেশের ইনিংসের ভিত শক্ত হয়। ওপেনিং জুটিতে জয়-সাদমান যোগ করেন ১৬৮ রান, যা দ্বিতীয় সেশনের মাঝামাঝি ভাঙে।
প্রথম ইনিংসের পর থেকেই আত্মবিশ্বাসী জয় আজ খেলেছেন ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস। ২৩৮ বলে ১৬৯ রানে অপরাজিত রয়েছেন তিনি। ইনিংসে ছিল ১৪টি চার ও ৪টি ছক্কা। টেস্ট ক্যারিয়ারে এটি তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি- এর আগেরটি এসেছিল দক্ষিণ আফ্রিকার কিংসমিডে ১৩৮ রানের ইনিংসে।
এই ইনিংসের সুবাদে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ওপেনার হিসেবে টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরির সামনে দাঁড়িয়ে আছেন জয়।
তৃতীয় সেশনে জয়কে সঙ্গ দেন সাবেক অধিনায়ক মুমিনুল হক। জয়ের সেঞ্চুরি উদযাপনের পর মুমিনুলও খেলেন হাত খুলে- ১২৪ বলে ৮০ রান করে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেন তিনি। ইনিংসে ৫টি চার ও ২টি ছক্কা ছিল।
শেষ সেশনের ৩৫ ওভারে এই দুজন মিলে ১৪০ রান যোগ করেন। ২৬৩ বলের জুটিতে এসেছে ১৭০ রান। মুমিনুল এখন ১৪তম টেস্ট সেঞ্চুরির অপেক্ষায়।
দ্বিতীয় দিনের সকালেই আয়ারল্যান্ডের ইনিংসের পরিসমাপ্তি ঘটে। প্রথম দিন ২৭০ রানে শেষ করা দলটি সকালে মাত্র ১৬ রান যোগ করে ২৮৬ রানে অলআউট হয়। পল স্টার্লিং ৬০, কেডে কারমাইকেল ৫৯, কার্টুস ক্যাম্পার ৪৪ ও লরকান টাকার ৪১ রান করেন।
লোয়ার অর্ডারের জর্ডান নেইল (৩০) ও বেরি ম্যাককার্টি (৩১) কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও সকালে হাসান মাহমুদ ও তাইজুল ইসলাম শেষ দুটি উইকেট তুলে নেন।
আয়ারল্যান্ডের ১০ উইকেটের ৭টিই এসেছে বাংলাদেশের স্পিনারদের হাতে। মেহেদী হাসান মিরাজ নিয়েছেন ৩ উইকেট (৫০ রানে), তাইজুল ইসলাম ও হাসান মুরাদ নেন ২টি করে। পেসার হাসান মাহমুদ নিয়েছেন ২ উইকেট, নাহিদ রানা একটি।
দিনের শেষে সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে উচ্ছ্বসিত দর্শক, মাঠে জয় ও মুমিনুলের আত্মবিশ্বাসী হাঁটা।
বাংলাদেশের ইনিংসে এখন ডাবল সেঞ্চুরির স্বপ্নে জয়, আর সেঞ্চুরির অপেক্ষায় মুমিনুল- তৃতীয় দিনে তাদের ব্যাটে কতদূর এগোয় বাংলাদেশ, সেটিই এখন আগ্রহের কেন্দ্র।




























