
জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান প্রধান উপদেষ্টা
জাতীয় নির্বাচনের দিনই চারটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে গণভোট আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি জানিয়েছেন, একটিমাত্র প্রশ্নে ভোটাররা ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোটের মাধ্যমে নিজেদের মতামত জানাবেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট যদি ‘হ্যাঁ’ হয়, তাহলে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠন করা হবে।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) দুপুর আড়াইটায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “জুলাই সনদ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমরা কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিধান গ্রহণ করেছি। এর মধ্যে অন্যতম হলো সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাবগুলোর ওপর গণভোট আয়োজন এবং পরে একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠন।”
ড. ইউনূস আরও জানান, সব দিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোট অনুষ্ঠিত হবে, অর্থাৎ ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে। এতে সংস্কারের প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে না; বরং নির্বাচন আরও উৎসবমুখর ও ব্যয়-সাশ্রয়ী হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “গণভোট আয়োজনের জন্য শিগগিরই প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন করা হবে। জুলাই সনদের আলোকে ব্যালটে উপস্থাপনযোগ্য প্রশ্ন নির্ধারণ করা হয়েছে।”
এরপর তিনি গণভোটে অন্তর্ভুক্ত চারটি মূল বিষয়ের কথা তুলে ধরেন—
১. নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন ও অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জুলাই সনদে নির্ধারিত প্রক্রিয়ায় গঠিত হবে।
২. আগামী সংসদ হবে দুই কক্ষবিশিষ্ট—নিম্নকক্ষের পাশাপাশি ভোটের অনুপাতে ১০০ সদস্যের একটি উচ্চকক্ষ থাকবে; সংবিধান সংশোধনের জন্য ওই উচ্চকক্ষের অনুমোদন বাধ্যতামূলক হবে।
৩. সংসদে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানো, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার ও কমিটির সভাপতি নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, স্থানীয় সরকার শক্তিশালীকরণসহ ৩০টি সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নে বিজয়ী দলগুলো বাধ্য থাকবে।
৪. জুলাই সনদে বর্ণিত অন্যান্য সংস্কারও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাস্তবায়িত হবে।
তিনি বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের অঙ্গীকারনামা অনুসারে সংবিধানে জুলাই জাতীয় সনদ অন্তর্ভুক্ত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এটিও আজকে অনুমোদিত আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।