
ছবি: সংগৃহীত
ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায় শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকালে ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সদ্য নির্মিত ছয়টি ১০ তলা আবাসিক ভবনে নতুন করে ফাটল দেখা দিয়েছে। মেঝে, দেয়াল ও ওয়াশরুমের বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরা পড়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। নির্মাণে দুর্নীতি ও নিম্নমানের কাজের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। আজকের ঘটনায় তা পুনরায় আলোচনায় এসেছে।
ভূমিকম্পের মুহূর্তের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সৌরভ বলেন, ভূমিকম্পের সময় আমি হলের ৬ তলায় ছিলাম। হঠাৎ ভবনটি প্রায় ১৫ সেকেন্ড ধরে তীব্রভাবে কাঁপতে থাকে। প্রথম মুহূর্তেই আতঙ্ক ছড়িয়ে যায়। আমি ও বন্ধুরা দ্রুত সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামতে শুরু করি। নেমে আসার সময় সিঁড়িতে প্রচন্ড ভিড় তৈরি হয়, অনেকে চিৎকার করছিল। নিচে নেমে সবার মুখে একই আতঙ্ক দেখেছি। যে মুহূর্তে ভবনটি কাঁপছিল, মনে হচ্ছিল বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। পরে ভবনের দেয়ালে ও বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখতে পাই, যা আমাদের উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দেয়।
সকালে ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পর হলগুলোর বিভিন্ন তলার শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে ভবন থেকে বের হয়ে খোলা স্থানে অবস্থান নেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, তিন বছর আগে নির্মিত নতুন হলগুলোতে শুরু থেকেই নিম্নমানের কাজের অভিযোগ ছিল। এ পরিস্থিতিতে তারা জীবননিরাপত্তা নিয়ে গভীর শঙ্কায় আছেন। শিক্ষার্থীদের দাবি অবিলম্বে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত, দায়ীদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ, সব আবাসিক ভবনের গাঠনিক শক্তি পুনর্মূল্যায়ন এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া।
ক্যাম্পাসে স্বাভাবিকতা ফিরলেও শিক্ষার্থীদের মনে আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। সাম্প্রতিক এই ঘটনা জাবির অবকাঠামোগত নিরাপত্তা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর স্বচ্ছতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, আমাদের নতুন হলগুলো বিগত প্রশাসনের সময়ে তৈরী করা হয়েছে। এই ভবনগুলো নির্মাণে যে দুর্নীতি অনিয়ম হয়েছে সেটি দৃশ্যমান। ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতি পর্যবেক্ষণ করছে। নিরাপত্তার স্বার্থে প্রকৌশল বিভাগকে জরুরি তদারকির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞ দল ফাটলের প্রকৃতি পরীক্ষা করার জন্য বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।



























