রবিবার । ডিসেম্বর ৭, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক দেশজুড়ে ২২ নভেম্বর ২০২৫, ৯:৫৪ পূর্বাহ্ন
শেয়ার

‘কলিজার টুকরারে এক নজর দেখার সৌভাগ্যটুকুও হইল না’


fatema

নিহত ফাতেমা।

স্ত্রীকে বাঁচাতে হাসপাতালের করিডোরে দৌড়াতে গিয়ে আদরের মেয়ের জানাজা এমনকি দাফনেও থাকতে পারেননি বাবা আব্দুল হক। শেষ বিদায়ের সময় সন্তানের মুখটা একনজর দেখতে না পারার যন্ত্রণা এখন তাঁকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। রূপগঞ্জে ভূমিকম্পে দেয়াল ধসে নিহত শিশু ফাতেমার কবরের কথা মনে করে তাই বুক চাপড়ে বিলাপ করছিলেন এই হতভাগ্য বাবা— ‘কলিজার টুকরারে এক নজর দেখার সৌভাগ্যটুকুও হইল না। দাফনের সময় শেষ বিদায়ও দিতে পারলাম না… আল্লাহ, এমন দিন যেন কোনো বাবাকে দেখতে না হয়।’

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সকালে রূপগঞ্জের ইসলামবাগে শিশু ফাতেমাকে কোলে নিয়ে বাবার বাড়ি যাচ্ছিলেন মা কুলসুম। হঠাৎ ভূমিকম্প শুরু হলে রাস্তার পাশে একটি উঁচু সীমানাপ্রাচীরের নিচে তাঁরা আশ্রয় নেন। কিন্তু মুহূর্তেই রড-পিলারহীন ১০ ফুট উঁচু দেয়ালটি ধসে পড়লে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায় ফাতেমা। গুরুতর আহত হন মা কুলসুম।

খবর পেয়ে ঢাকা থেকে ছুটে আসেন সবজি বিক্রেতা আব্দুল হক। কিন্তু আহত স্ত্রীকে নিয়ে এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ছুটতে গিয়ে মেয়ের দাফনে উপস্থিত থাকতে পারেননি তিনি। বিকেলে স্বজন ও প্রতিবেশীরা ফাতেমাকে দাফন করেন। বাবার আক্ষেপ, পৃথিবীর সব বাবা সন্তানকে শেষ বিদায় দিতে পারলেও, তাঁর সেই সৌভাগ্যটুকুও হলো না।

রূপগঞ্জের ইউএনও সাইফুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানান, ধসে পড়া দেয়ালটি ছিল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও ত্রুটিপূর্ণ। তিনি অবৈধ এসব স্থাপনা সরানোর আশ্বাস দেন এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা সহায়তা প্রদান করেন।