রবিবার । ডিসেম্বর ৭, ২০২৫
এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক বিনোদন ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ২:৫৮ অপরাহ্ন
শেয়ার

বলিউড কিংবদন্তি ধর্মেন্দ্র মারা গেছেন


Dharmendra

বলিউডের কিংবদন্তি ধর্মেন্দ্র মারা গেছেন। ৮৯ বছর বয়সী এই বর্ষীয়ান অভিনেতা সোমবার (২৪ নভেম্বর) সকালে প্রয়াত হন। চলতি মাসের শুরুতে অসুস্থ হয়ে কিছুদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। পরবর্তীতে সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফেরেন।

ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবরে বলিউডজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

ছয় দশকেরও বেশি সময়জুড়ে বর্ণাঢ্য অভিনয়জীবনে অ্যাকশন হিরো, রোমান্টিক চরিত্র থেকে শুরু করে প্রবীণ রাষ্ট্রনায়কের ভূমিকায় সমান দক্ষতায় ফুটিয়ে তুলেছিলেন তিনি। তবু বিস্ময়করভাবে ‘সুপারস্টার’ তকমাটি কখনোই তার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়নি।

ধর্মেন্দ্রর উজ্জ্বল বলিউড ক্যারিয়ার
ধর্মেন্দ্র কেওয়াল কৃষণ দেওল ১৯৬০ সালে মাত্র ২৪ বছর বয়সে দিল ভি তেরা হম ভি তেরে ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু করেন। পরবর্তী কয়েক বছরে বন্ধিনী, আই মিলন কি বেলা, কাজল–এর মতো সফল ছবিতে সহ-চরিত্রে অভিনয় করেন।

তবে ১৯৬৫ সালের যুদ্ধভিত্তিক ছবি হকীকত তাঁকে বক্স অফিসে পরিচিত মুখে পরিণত করে। এরপর ফুল অউর পাথর তাকে বাণিজ্যিকভাবে প্রতিষ্ঠিত নায়ক হিসেবে তুলে ধরে। ১৯৬০-এর দশকের শেষ থেকে ১৯৭০-এর পুরো সময়জুড়ে ধারাবাহিকভাবে শীর্ষস্থানীয় তারকাদের একজন ছিলেন তিনি। এ সময়ে অনুপমা, আদমি অউর ইনসান, মেরা গাঁও মেরা দেশ, সীতা অউর গীতা, শোলে, লোফার, ইয়াদোঁ কি বারাত, ধর্ম বীর—এমন বহু হিট ছবি উপহার দেন।

৮০–এর দশকে তিনি অ্যাকশন ঘরানার চলচ্চিত্রে মনোযোগী হন। কম বাজেটের একাধিক ছবিতে অভিনয় করেন— বদলে কি আগ, গুলামি, লোহা, এলান-ই-জাঙ্গ। ৬৪ বছরের ক্যারিয়ারে তিনি ৭৫টি হিট ছবিতে অভিনয় করেছেন—যা হিন্দি চলচ্চিত্রে কোনো অভিনেতার সর্বোচ্চ লিড-রোল সাফল্য। এই সংখ্যা অমিতাভ বচ্চনের (৫৭), রাজেশ খান্নার (৪২), শাহরুখ খানের (৩৫) ও সালমান খানের (৩৮)।

তবু কেন ‘সুপারস্টার’ বলা হতো না ধর্মেন্দ্রকে
অসাধারণ সফলতা সত্ত্বেও ধর্মেন্দ্র কখনোই বলিউডের ‘নম্বর ওয়ান’ তারকা হিসেবে বিবেচিত হননি। তাঁর ক্যারিয়ার শুরুর সময়ে শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছিলেন দিলিপ কুমার। এরপর অল্প সময়ের জন্য রাজেশ খান্না এবং ১৯৭০-এর দশকে অমিতাভ বচ্চন শিল্পে নেতৃত্ব দেন। ধর্মেন্দ্রর ৭০–এর দশকের বহু বড় ছবি ছিল বহু-নায়ক বা এনসেম্বল কাস্ট—যেমন শোলে, ইয়াদোঁ কি বারাত, মেরা গাঁও মেরা দেশ, ধর্ম বীর। অন্যদিকে সমসাময়িক নায়কেরা নিয়মিত একক নায়ক-কেন্দ্রিক হিট উপহার দিচ্ছিলেন।

১৯৮০–এর দশকে ধর্মেন্দ্র কয়েকটি একক হিট দিলেও সেগুলোর বাজেট ও পরিসর ছিল তুলনামূলকভাবে ছোট—অমিতাভ, বিনোদ খান্না বা ঋষি কাপুর অভিনীত ছবির মতো ব্যাপক নয়। তার ক্যারিয়ারে যেমন ৬টি ব্লকবাস্টার ও ৭টি সুপারহিট ছিল, তেমনি ছিল ১৫০টির মতো ব্যর্থ ছবি—যা বলিউডে সর্বোচ্চ ব্যর্থতার তালিকায় দ্বিতীয় (মিঠুন চক্রবর্তীর পর) অবস্থানে। এই কম সাফল্যের হার তাকে ‘সুপারস্টার’ তকমা থেকে দূরে রেখেছিল।

তবুও, তথাকথিত ‘বি-গ্রেড’ অ্যাকশন ছবিতে অভিনয় করা নিয়ে তিনি কখনোই বিব্রত ছিলেন না। ৮০–এর দশকের শেষ দিকে হিন্দুস্তান টাইমস-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ধর্মেন্দ্র বলেছিলেন, “আমি পঞ্চাশের কোঠায়, তবুও এখনো হেলিকপ্টার থেকে ঝাঁপ দিই—এটাও তো একটা কৃতিত্ব (হাসি)। কিন্তু বেশি বাছবিচার করার সুযোগ থাকে না। অভ্যাস তো পুরোনো। আমি ছবিকে ভালোবাসি। সুযোগ পেলেই সাইন করে ফেলি। জানি, কিছু ছবি চলবে না, তবুও মন দিয়ে অভিনয় করি। বছরে এত ছবি করি, গল্প এক—তবুও তিনটে খুব ভালো চলে। কিন্তু বাকি ছবিগুলো বাদ দিতে পারি না। সেগুলোও পরিশ্রম করে বানানো। মানুষ আজও আমাকে ‘জাম্পিং–শুটিং’ করতে দেখতে ভালোবাসে, তাহলে দর্শক খুশি থাকলে সমস্যা কোথায়?”